সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে চাপে চীনের হাসপাতাল
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ৭:৪৭:৪৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : অল্প সময়ের মধ্যে কোভিড মোকাবেলার নীতি ১৮০ ডিগ্রি পালটে ফেলার পর চীনের হাসপাতালগুলো ব্যাপক চাপে পড়েছে।
কোভিড নীতি তড়িঘড়ি করে বদলানোর কারণে এখন সেখানে চিকিৎসক ও নার্সদের মাধ্যমেও রোগীরা প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিবিসি।
কর্মী সংকটের কারণে দেশটির হাসপাতালগুলো এমনকী ভাইরাসে আক্রান্ত ফ্রন্টলাইন মেডিকেল কর্মীদেরও ডেকে পাঠাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, পর্যবেক্ষণ ব্রিটিশ গণমাধ্যমটির।
যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চীনা অধ্যাপক চেন শি শুরু থেকেই স্বদেশের কোভিড সংকট পর্যবেক্ষণ করে আসছেন।
তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, চীনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন যে ব্যাপক চাপে পড়েছে তা নিয়ে দেশটির হাসপাতাল পরিচালক ও অন্যান্য মেডিকেল কর্মীদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও হাসপাতালগুলোতে কাজ করতে হচ্ছে, যা সেখানে সংক্রমণের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করছে, বলেছেন তিনি।
‘শূন্য কোভিড’ নীতিতে বদল আনার পর চীনের হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ মোকাবেলায় তড়িঘড়ি করে তাদের জ্বর সংক্রান্ত ওয়ার্ড বাড়ালেও সেগুলো দ্রুতই ভরে যায়; এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও বাড়িতে থাকা যাবে এই বার্তা চীনা নাগরিকরা আমলে নেয়নি। বিষয়টি জনগণকে বোঝাতে আরও অনেক কিছু করা দরকার বলে মনে করেন অধ্যাপক চেন।
সামান্য উপসর্গেও বাড়িতে থাকার সংস্কৃতি নেই চীনে। অসুস্থ বোধ করলেই সবাই হাসপাতালে ছুটে যায়, যা সহজেই চীনের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলতে পারে, বলেছেন তিনি।
ফার্মেসিগুলোতে লোকজনের ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে ঠা-াজনিত রোগ বা ফ্লুর ওষুধের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ঘরে বসেই কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা যাবে, এমন কিটও সহজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বেইজিংয়ে রেস্তোরাঁগুলো ফের খুললেও সেখানে ক্রেতা যাচ্ছে হাতেগোনা; এমনকী রাজধানীর রাস্তাগুলোও বেশ নীরব। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের অফিসে ফিরতে বলছে, কিন্তু কর্মীদের অনেকেই তা করতে রাজি হচ্ছে না।
কয়েক সপ্তাহ আগেও, যখন চীনের সরকার ‘শূন্য কোভিড’ নীতিতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানাচ্ছিল, তখন রাস্তাঘাট, রেস্তোরাঁ আর দপ্তরগুলোর এমন চিত্র স্বাভাবিক ছিল। কারণ তখন লকডাউনের পাশাপাশি আক্রান্তদের কেন্দ্রীয় কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থাপনায় যেতে হত।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি অগের মতো নয়। বিক্ষোভ ও অসন্তোষের মুখে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি নিজেদের ঝুঁকির মুখে না ফেলে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পথে হেঁটেছে।