গণশুনানিতে ওসমানী বিমানবন্দরে ‘যাত্রী হয়রানির’ চিত্র
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:৪০:৫৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : যাত্রী হয়রানি লাঘবসহ উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উঠে এসেছে বিমানবন্দরে ‘যাত্রী হয়রানির’ নানা চিত্র। সোমবার সকাল ১১টায় বিমানবন্দরের কনফারেন্স হলে এ গণশুনানি পরিচালনা করেন বিমানবন্দরে ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমদ।
নাম প্রকাশ না করে গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারী এক যাত্রী বলেন, ব্রিটেনে তার ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুই ছেলেকে নিয়ে দেশে বেড়াতে আসেন। যখন বিমানবন্দরে প্রবেশ করছিলেন, তখন দারোয়ান তাদের আটকে রাখেন। তিনি তখন বলেন, তাদেরকে দেখে কি যাত্রী মনে হয় না? তিনি সঙ্গে থাকার পরও তাদের হয়রানি করা হয়। বিমানবন্দরে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না হয়, সে বিষয়ে অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় ম্যানচেস্টারের ফ্লাইটের যাত্রী সাফি আহমদ বলেন, অন্যান্য দেশের বিমানবন্দরের মতো আমাদের দেশের বিমানবন্দরগুলোতে উষ্ণ আতিথেয়তা লক্ষ্য করা যায়। আরেকটু ভাল ব্যবহার সকলেই আশা করেন। কেননা, সবাই একজন যাত্রীর লাগেজ চেক করবেন, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু তদারকির নামে বিমানবন্দরে যাত্রীদের হয়রানি করা হচ্ছে। গণশুনানিতে উপস্থিত সাংবাদিক ও যাত্রীদের অনেকে বলেন, বিমান বন্দরের পার্কিংস্থলে যাত্রীদের নিয়ে টানা হেঁচড়া, এমনকি অনেকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।
বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, বিমানবন্দরে আগে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। আনসারদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল। তবে সেটা এখন নেই। তাছাড়া বিমান ল্যান্ডিং থেকে বেল্টের যে দূরত্ব সেখানে লাগেজ কাটার মতো সুযোগ নেই। পাশাপাশি মালামাল যখন বেল্টে আসে, তখন শকুন দৃষ্টিতে এপিবিএন সদস্যরা কর্তব্য পালন করে থাকেন। সেই সঙ্গে গোয়েন্দা তদারকি তো রয়েছেই। তবে বাইরে পার্কিং জোনে যাত্রী হয়রানির বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে এবং যাত্রীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহারের জন্য চালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার জন্য এপিবিএন কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেন।
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোতে টিকিটের বেশি দাম আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিতভাবে জানাবো, যাতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন। কেননা, সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা ট্রেনের ভাড়া তো হুট করে বাড়ে না, বিমানের ভাড়া কেন বাড়বে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলোতে ৩ হাজার ৮০০ টাকার ভাড়া ৫ হাজারে পৌছাতে পারে, তাই বলে ৭ থেকে ১০ হাজার কেন হবে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনদের মাধ্যমে তিনি লিখিতভাবে জানাবেন। তাছাড়া ওসমানী বিমানবন্দরে কোনোভাবে যাতে যাত্রীরা হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সকলের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেন তিনি।
গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ওসমানী বিমানবন্দরের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের স্টেশন ব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার, কাস্টমস কর্মকর্তা, আর্মড পুলিশ, ইমিগ্রেশন পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও বিমান যাত্রীরা।