সিলেটে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৯৬ ভাগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১০:২১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : তীব্র শীত উপেক্ষা করে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা। শুক্রবার সিলেট বিভাগের ৭২ কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত এই বৃত্তি পরীক্ষায় ৩৯ হাজার ৪২ জনের মধ্যে ৩৭ হাজার ৫৪৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। উপস্থিতির হার ছিল ৯৬ শতাংশ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় উপ পরিচালক জালাল উদ্দিন দৈনিক জালালাবাদকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুরো বিভাগজুড়ে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হয় এবং বিভাগীয় কমিশনার, স্ব স্ব জেলার জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা শিক্ষা অফিস বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়টি মনিটরিং করেছেন বলেও জানান তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট সূত্রে জানা গেছে, টানা ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষার জন্য এবছর সিলেট বিভাগের ৩৯ হাজার ৪২ জন পরীক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩৭ হাজার ৫৪৩ জন। বিভাগে গড় উপস্থিতি ছিল ৯৬ শতাংশ। এছাড়া সিলেট জেলার ১২টি কেন্দ্রে ১২ হাজার ৬২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ১২ হাজার ৮৫ জন। উপস্থিতির হার ৯৬%। সুনামগঞ্জ জেলার ১৮টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ৭৬৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ৯ হাজার ৩১২ জন। উপস্থিতির হার ৯৫%। হবিগঞ্জ জেলার ১৬টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৮৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ৮ হাজার ৬০১ জন। উপস্থিতির হার ৯৭%। মৌলভীবাজার জেলার ১৪টি কেন্দ্রে ৭ হাজার ৭৫৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেন ৭ হাজার ৫৪৫ জন। উপস্থিতির হার ৯৭%।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সিলেটসহ সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষা একযোগে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশে মোট প্রায় ৬ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে থেকে বৃত্তি পাবে ৮২ হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে ৩৩ হাজার এবং সাধারণ গ্রেডে ৪৯ হাজার ৫০০ জনকে বৃত্তি দেয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষাসমাপনী পরীক্ষা পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী এবার ট্যালেন্টপুলে ৩৩ হাজার ও সাধারণ গ্রেডে ৪৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হবে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তির ক্ষেত্রে উপজেলা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সংখ্যার ভিত্তিতে মোট বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছাত্র এবং ৫০ শতাংশ ছাত্রীদের মধ্যে জেন্ডারভিত্তিক মেধা অনুসারে প্রদান করা হবে। সাধারণ গ্রেডে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডভিত্তিক ৩ জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী হিসেবে ৪৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হবে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসিক ৩০০ টাকা এবং সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তরা মাসিক ২২৫ টাকা করে পাবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবারের প্রাথমিকের বৃত্তিতে ৪ টি বিষয় থেকে ১০০ নম্বরের অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং বিজ্ঞান বিষয়ে ২৫ নম্বর করে প্রশ্ন ছিল। দুই ঘণ্টা সময়ব্যাপী অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় বহু-নির্বাচনী এবং লিখিত দুই ধরনের প্রশ্ন রাখা হয়। এরমধ্যে ৪০ শতাংশ লিখিত ও ৬০ শতাংশ এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্ন ছিল।
উল্লেখ্য- ২০০৯ সাল থেকে জাতীয়ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়া শুরু করে সরকার। প্রথমে শুধু সাধারণ ধারার শিক্ষায় এটি সীমাবদ্ধ ছিল। পরে মাদরাসার ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (৫ম শ্রেণির সমমান) পরীক্ষাও চালু করা হয়। ২০১০ সালে জেএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চালুর পরই বন্ধ হয়ে যায় ৫ম ও ৮ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি জেএসসি ও জেডিসি সমমান পরীক্ষা। এবারও এ দুটি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ ছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষে নতুন কারিকুলামে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়েছে। পিইসি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্তের পরই প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।