শান্তিগঞ্জে পানিসংকটে ধলার হাওর ফেটে চৌচির
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জানুয়ারি ২০২৩, ৬:০৮:৩৩ অপরাহ্ন
শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি:
শান্তিগঞ্জের পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন দক্ষিণের (ধলার বন) হাওরে পানি শুকিয়ে মৎস্য নিধন করায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। পানি সংকটের কারণে তিনটি ইউনিয়ন জুড়ে বিস্তৃত প্রায় ২৫’শ একর আয়তনের ধলাই হাওর ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে আবাদের সময়েও ফসল রোপন করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে চরম হতাশা বিরাজ করছে কৃষকদের মাঝে।
এনিয়ে ২৬ ডিসেম্বর ২ শতাধিক কৃষকের অংশগ্রহণে পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সকিনা বেগম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এসময় কৃষকদের দাবি মেনে নিয়ে ৩ দিনের মধ্যে হাওরের পানিসংকট নিরসন ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাল্টা অভিযোগের ফলে এখনও হাওরের পানি সংকট নিরসন না হওয়ায় নড়েচড়ে বসেন ইউনিয়নের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। চলমান সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সরেজমিনে ধলার হাওর পরিদর্শন করেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনছার উদ্দিন, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার ও ইউপি সদস্য রঞ্জিত সুত্রধর।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার বলেন, একটা স্বার্থান্বেষী মহল নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে হাওরের পানি শুকিয়ে মৎস্য নিধন করে হাজারো একর জমি হুমকির মুখে ফেলেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এই বিষয়ে অবগত আছেন। তিনি বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাদেরকেও জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ইউএনও এই ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনছার উদ্দিন বলেন, আমরা হাওর পরিদর্শন করে দেখতে পাই যে হাওরে পানির তীব্র সংকট। ১ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে কৃষকরা ক্ষতির মধ্যে পড়বেন। এতে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন কোনো আবাদি জমি যেন পতিত না থাকে। ধলার হাওরে পানি সংকটের কারণে প্রায় ২৫’শ একর আবাদি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
হাওরের পানিসংকট নিরসন বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, সরজমিনে ঘুরে দেখেছি হাওরে পানি নেই। এই বিষয়টি নিরসন করতে দু’পক্ষের সাথে আমাদের আলাপ হয়েছে। হাওরের পানিসংকট দুর করতে আমরা কাজ করছি। প্রশাসনের সাথেও আলাপ হয়েছে। তারাও সহযোগিতা করবেন। আশাকরি এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের পানির সমস্যা সমাধান করতে পারব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনে উপজেলার পরিষদের পক্ষ থেকে বরাদ্দ লাগলে তার ব্যবস্থাও করবো।