বেড়েই চলেছে চিকিৎসা খরচের বোঝা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:০০:৩৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : দেশে চিকিৎসা খরচের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। ২০১২ সালে স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশলের অংশ হিসেবে সরকার ২০৩২ সালের মধ্যে রোগীর নিজের পকেট থেকে দেওয়া চিকিৎসা খরচ (আউট-অব-পকেট-পেমেন্ট বা ওওপি) ৩২ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়। লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়ার পর প্রায় ১ দশক পেরিয়ে গেলেও রোগীদের ওপর খরচের বোঝা কমার বদলে শুধু বেড়েই যাচ্ছে।
রোগীর চিকিৎসা খরচের যে অংশ কোনো ধরনের বিমার মাধ্যমে পরিশোধ করা যায় না, সেটাকেই ‘নিজের পকেট থেকে করা খরচ’ বা ওওপি বলা হয়। ২০১২ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা খরচের ৬২ শতাংশই ছিল ওওপি খাতে।
১৯৯৭-২০২০ সালের বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস (বিএনএইচএ) অনুযায়ী, ২০২০ সালে এই হার বেড়ে ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ হয়। সে সময় স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় খরচ ছিল ৭৭ হাজার ৭৩৪ দশমিক ৭ কোটি টাকা, যেটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের ওওপি ছিল ৭৪ শতাংশ। আফগানিস্তানের ৭৪ দশমিক ৮১ শতাংশের পর এটাই দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ওওপি। এই অঞ্চলে ভুটানের ওওপি সবচেয়ে কম (১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ)।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, উচ্চ মাত্রার ওওপির জন্য মূলত ওষুধের মূল্যবৃদ্ধিই দায়ী। এক্ষেত্রে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনৈতিক বিপণন কৌশলকে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সে প্রতিবেদনে দ্বিতীয় মূল কারণ হিসেবে রোগ নির্ণয়ের খরচকে চিহ্নিত করা হয়।
স্বাস্থ্যসেবা অর্থায়ন কৌশলে ২০৩২ সালের মধ্যে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২০ সালে এই হার ছিল ২৩ দশমিক ১ শতাংশ।
ওওপির মধ্যে ওষুধ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, চিকিৎসক, অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, দন্ত চিকিৎসক, হাসপাতাল ও মেডিকেল পণ্যের পেছনে যথাক্রমে ৬৪ দশমিক ৬, ১১ দশমিক ৭, ১০ দশমিক ৮, ২ দশমিক ৪, শূন্য দশমিক ৩, ১০ দশমিক ১ ও শূন্য দশমিক ১ শতাংশ খরচ হয়। ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মাথাপিছু স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় ২৮ ডলার থেকে বেড়ে ৫৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে।