শীতে কাবু হবিগঞ্জের নিম্ন আয়ের মানুষ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ৬:০৯:৪৩ অপরাহ্ন
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র হাড় কাঁপানো শীতে চা শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের লোকরা কাবু হয়ে পড়ছেন। গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও ঘন কুয়াশায় জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। শিশু ও বয়স্কদের অনেকেই ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভুগছেন। গত তিনদিন ধর দিনে সূর্যের তেমন আলো দেখা যাচ্ছে না। চা বাগান ও বনাঞ্চল অধ্যুষিত বাহুবল চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলায় নিম্ন আয়ের লোকদের মধ্যে গরম কাপড়ের অভাব দেখা দিয়েছে।
প্রকৃতির অরণ্যানি, গাছ গাছালি ও সবুজে ঘেরা থাকায় চা বাগান সমুহে সাধারণত শীত, মৃদু বাতাস ও ঘনকুয়াশাও তুলনামূলক বেশি। ফলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে পড়েন বস্তির নিম্ন আয়ের ও চা শ্রমিকদের বৃহৎ একটি অংশ। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে হাড় কাঁপানো শীতে তারা খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। কনকনে শীতের কারণে বয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত রোগও বাড়তে শুরু করেছে।
চা শ্রমিকরা জানান, স্বল্প আয় থাকায় গরম কাপড় কেনা তাদের অধিকাংশেরই সামর্থ্যের বাইরে। শীত নিবারণে এসব পরিবার সদস্যরা ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড়কুঁটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে সময় কাটান। চা বাগান কর্তৃপক্ষ, সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগেও এবছর কোন শীতবস্ত্র বিতরণ হচ্ছে না। চা বাগানের প্রায় ৮৫ শতাংশেরই খুবই দুঃখ-কষ্টে দিনযাপন করতে হচ্ছে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেন।
বাহুবল উপজেলার দারাগাঁও চা বাগানের শ্রমিক সন্তান অজয় রবিদাস বলেন, এখন আর নির্বাচন নয়। তাই শীতবস্ত্র বিতরণে কেউ আসছেন না। দরিদ্র চা শ্রমিক পরিবার সদস্যরা প্রচণ্ড শীতে খুবই কষ্ট ভোগ করছেন।
চুনারুঘাটের ডানকান ব্রাদার্সের চা বাগান শ্রমিক মায়া রবিদাস, মনি সিং, শমশেরনগর চা বাগানের আদরমনি মৃধা বলেন, দৈনিক মাত্র ১৭০ টাকা মজুরিতে পাঁচ, সাত সদস্যের পরিবারের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। আমরা চা শ্রমিকরা খাইবো কি আর কাপড় চোপড় কিনবোই বা কি?
বানিয়াচংয়ের মন্দরী ইউনয়নের কাউরাখান্দি গ্রামের কৃষি শ্রমিক খইরুদ্দিন মামুন ও টিক্কাজুরী গ্রামের মোজাম্মেল বলেন, এই ঠান্ডায় প্রচণ্ড কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। আমাদের আয় রোজগার নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় সংসারের খরচ যোগাবো না গরম কাপড় কিনবো?
রুপাইছড়া রাবার বাগানের শ্রমিক নেতা অমিরন দেব দেওছড়া চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি শ্রী কুমার কৈরি ও চা শ্রমিক সংঘের নেতা যুবরাজ বলেন, শীতের সময়ে চা শ্রমিকদের মধ্যে বাগান কর্তৃপক্ষ কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করেন না।