হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় বোরো ফসল রোপণ বাধাগ্রস্ত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৫:৫৫:১৫ অপরাহ্ন
তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, জামালগঞ্জ :
দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো কনকনে তীব্র শীতে কাঁপছে হাওরবাসী। বেশ কয়েক দিন যাবত হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশার কারণে বছরের একটি মাত্র বোরো ফসল রোপণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।
হাওর এলাকায় প্রচন্ড শীতের কারণে দুঃস্থ, ছিন্নমূল, বয়ষ্ক ও শিশুদের অবস্থা জবুথবু। বিকেল থেকে পরদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে হাওর এলাকা। শীতবস্ত্রের অভাবে শহরে ছিন্নমূল ও হাওরের দরিদ্র মানুষেরা কাবু হয়ে কোন মতে শীত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকেই রাত জেগে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। শ্রমজীবি অনেক মানুষ কাজে বের হতে না পারায় তাদের পরিবার নিয়ে কষ্টে পড়েছেন।
ঘন কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত পড়ছে বেশ কয়েক দিন যাবত। চারিদিকে বইছে হিমেল হাওয়া। বেশ কয়েক দিন ধরে সকালে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে অনেককে। পৌষের এই হাড় কাঁপানো শীত ও তীব্র ঘন কুয়াশার কারণে বিকেল থেকে পরদিন ১০-১১টা পর্যন্ত লোকজন ঘর থেকে কোন কাজে বের হতে পারেছেন না।
বিশেষ করে হাওর এলাকার এক ফসলী বোরো ফসল রোপণে ভরা মৌসুমে কৃষকরা ধানী ক্ষেতে কাজ করতে পারছেনা। শীতের তীব্রতায় শিশু ও বৃদ্ধ লোকজনের বিভিন্ন রোগ উপসর্গের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লেপ-তোষক, চাদর, সোয়েটারসহ গরম কাপড়ের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। গরম কাপড়ের দোকানে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেলেও দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষজন তা কিনতে পারছেননা।
জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ মঈন উদ্দিন আলমগীর বলেন, পৌষের তীব্র শীতে ঠান্ডাজনিত কারণে কিছুটা রোগব্যাধি বাড়ছে। তার মধ্য সর্দি, কাশি, সাধারণ জ্বর, চর্ম রোগ, ডায়রিয়া জাতীয় রোগ কিছুটা বেড়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু জনবল সংকট রয়েছে। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। রোগীরাও চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত দেব বলেন, বেশ ক’দিন ধরে শীতের প্রকোপ একটু বেশী। জামালগঞ্জে এ পর্যন্ত তিন হাজার কম্বল সরকারীভাবে আমরা পেয়েছি। যা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম চলছে। যাদেরকে দেয়া হচ্ছে, তাদের তালিকা করে ইউনিয়ন পরিষদ আমাদের দিয়ে দিবে। জেলায় আরো কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে, এগুলো পেলে আমরা আরো কিছু বিতরণ করতে পারবো। তিনি এই শীতে সরকারের পাশাপাশি দুঃস্থ ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে কম্বল ও গরম কাপড় নিয়ে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।