বিদেশীদের মাতব্বরি করে পরামর্শ দেয়ার দরকার নেই-পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:১৩:০৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গে বিদেশীদের মন্তব্যকে ‘মাতব্বরি’ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার সকালে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়ে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘যখন আওয়ামী লীগ মেজরিটি পেল, তাদের সরকার গঠন করতে দেয়া হলো না, তখনই তো আমরা আন্দোলন শুরু করলাম। তারপর জেনোসাইড হওয়ার পরে আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা দিলাম। আমাদের জন্ম হয়েছে টু আপহোল্ড ডিমোক্রেসি, টু আপহোল্ড জাস্টিস, টু আপহোল্ড হিউম্যান ডিগনিটি। আমরা যুদ্ধ করেছি টু আপহোল্ড হিউম্যানিটি। এদেশের প্রতিটি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই প্রিন্সিপলগুলো আছে। তো অন্যদের মাতব্বরি করে আমাদের পরামর্শ দেয়ার দরকার নাই। উনারা নিজেদের আয়নায় দেখুক।’
গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটনের ফরেন প্রেস সেন্টারে বিশেষ ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকার অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমরা এই চাওয়াকে স্বাগত জানাই। তবে এসব কথা ও কাজের মধ্যে মিল আছে কিনা- তা পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
বিষয়টি স্মরণ করিয়ে ড. মোমেনের উদ্দেশে সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, গত সপ্তাহে মার্কিন মুখপাত্র জানিয়েছেন তারা বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চান। তারা দেখতে চান, বাংলাদেশ সরকার যেভাবে বলছে, সেভাবেই নির্বাচনটা করে কিনা।
উত্তরে মার্কিন হাউজ স্পিকার নির্বাচনের জটিলতা তুলে ধরেন তিনি। সম্প্রতি প্রতিনিধি পরিষদে ১৫ দফা ভোটাভুটির পর নজিরবিহীনভাবে কেভিন ম্যাকার্থি স্পিকার নির্বাচিত হন। ‘এ ধরনের ঝামেলায় আমরা যেতে চাই না’ উল্লেখ করে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা যেভাবে বলেছি, সেভাবে নির্বাচন করব।’
যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ‘আমেরিকার ৮২ পারসেন্ট বা ৭২ পারসেন্ট জনগণ মনে করে, আমেরিকার ডেমোক্রেসি খুব দুর্বল। আর রিপাবলিকান পার্টির ৭৭ পারসেন্ট মনে করেন, গত নির্বাচন ছিল ভুয়া নির্বাচন। এবং দে হ্যাভ স্টোলেন। এইরকম তাদের মনমানসিকতা। আমাদের দেশেও এরকম লোকজন রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি দেখেন, ওই দেশে অ্যাভারেজ কয়জন লোক ভোট দেয়? পঞ্চাশের নিচে। আর আমাদের দেশে ৭২, ৮০, ৯০ পারসেন্ট লোক ভোট দেয়।’
‘আমাদের দেশে নির্বাচন খুব স্বতস্ফুর্ত হয়’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওইসব দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) নির্বাচনের একমাস আগে ক্যাম্পেইন শুরু হয়। আমাদের দেশে শুরু হয় এক বছর আগে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা অঙ্গীকার করেছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার করেছেন, আমাদের আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য এবং ইনসক্লুসিভ হবে। যারা ইলেকশনে আসবেন, সবাইকে নিয়ে আমরা নির্বাচন করতে চাই। আর আমরা, আমার দল বিশ্বাস করে, আমার ভোট আমি দেব, যারে খুশি তারে দেব। এটা আমার স্লোগান। অন্যরা (পর্যবেক্ষণ) করতে পারেন। বাট দে শুড ফলো আস। আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। যারা এ নিয়ে কথা বলে তাদের ইতিহাস নিয়ে অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের অভাব।’