কুমিল্লাকে উড়িয়ে সিলেটের হ্যাটট্রিক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:১১:৪৫ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : কবজির মোচড়, পেশির জোর, দুর্দান্ত টাইমিং আর স্কিল, সব কিছুর প্রদর্শনী চলতে থাকল। আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, এবার সেখান থেকেই যেন শুরু করে আরেকটি অসাধারণ ইনিংস খেললেন তৌহিদ হৃদয়। সিলেটকে উপহার দিলেন হ্যাট্রিক জয়।
বিপিএলে নিজেদের প্রথম আসরে টানা তৃতীয় জয়ের স্বাদ পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। অপরাজেয় পথচলায় এবার তারা ৫ উইকেটে হারাল আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন্স কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার কুমিল্লা ২০ ওভারে তোলে ১৪৯ রান। সিলেট তা অনায়াসে পেরিয়ে যায় ১৪ বল বাকি রেখে।
জাকের আলি অনিকের অর্ধশতকে ১৪৯ রানের পুঁজি পেয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দেড়শ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই মোহাম্মদ হারিসের উইকেট হারায় সিলেট। তিনে নেমে তৌহিদ হৃদয় পাওয়ার প্লেতে নাজমুল শান্তর সঙ্গে ৫০ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। তবে শান্তও ফিরে গেলে জাকির হাসান নেমেই ধুন্ধুমার ব্যাট চালাতে থাকেন।
অন্যদিকে তৌহিদ গত ম্যাচের পর এদিনও তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। ৩৭ বলে চার ছক্কা আর তিন চারে খেলেন ৫৬ রানের ম্যাচসেরা একটি ইনিংস। তবে জয় নিয়ে ফেরার আগেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। খুশদিল শাহর বল উইকেট ছেড়ে বেরিয় উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাটে সংযোগ না হয়ে সেটা চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। স্টাম্প ভাঙতে বিলম্ব করেননি দেশসেরা এই ব্যাটার।
তবে তৌহিদের আগেই ফিরে গেছেন জাকির হাসান। আগের দিন যিনি ১৮ বলে ৪৩ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন। আজও তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ বলে ২০ রান। দুটি ছক্কার সঙ্গে ছিল একটি চারের মার। মুশফিকুর রহিম খেলেন ২৫ বলে ২৮ রানের একটি ইনিংস। যা সাজানো ছিল দুটি চারের মারে।
আগেরদিন শেষ দুই বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতানো থিসারা এক ছক্কা মেরেই ৮ রান করে ফিরে যান। আউট হয়েছেন অবশ্য ছক্কা মারতে গিয়েই। কুমিল্লার হয়ে খুশদিল ও মোহাম্মদ নবি নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া আবু হায়দার শিকার করেছেন আরও একটি উইকেট।
টসে জিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই চার মেরে বড় কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন লিটন। তবে এরপরের বলেই থিসারার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন লিটন। আউট হওয়ার আগে ৪ বলে ৮ রান করেন লিটন দাস। তিনে নেমে আক্রমণাত্নক খেলতে থাকেন সৈকত আলী। তবে দলীয় ৩৭ রানের মাথায় বিদায় নেন ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলা সৈকত। এর কিছুক্ষণ পরেই সাজঘরে ফেরেন দলীয় অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ৪৬ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা।
এরপর জাকের আলিকে সাথে নিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন মালান। দুজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে কুমিল্লার বোর্ডে যোগ হয় ৫৩ রান। দলীয় ৯৯ রানের মাথায় আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান মালান। আউট হওয়ার আগে ৩৯ বলে ৩৭ রানের ধীরগতির এক ইনিংস খেলেন তিনি।
মালান আউট হওয়ার পরেই হাত খুলে মারতে শুরু করেন জাকের আলি। চার-ছক্কায় দ্রুতই পেয়ে যান ফিফটির দেখা। কুমিল্লার বাকি ব্যাটারদের কেউ বলার মত কিছু করতে পারেননি। জাকেরের হার না মানা ৫৭ রানের ইনিংস ভর করেই লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় কুমিল্লা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৬ (লিটন ৮, মালান ৩৭, সৈকত ২০, ইমরুল ২, জাকের ৫৭*, মোসাদ্দেক ৫, নবি ৮, আবু হায়দার ৭*; থিসারা ৪-০-২৬-২, আমির ৪-০-২২-২, মাশরাফি ৪-০-৩২-১, ইমাদ ৪-০-২৯-১, রাজা ৪-০-৩৯-০)।
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৭.৪ ওভারে ১৫০/৫ (শান্ত ১৯, হারিস ৯, হৃদয় ৫৬, জাকির ২০, মুশফিক ২৮*, থিসারা ৮, আকবর ৬*; ফারুকি ৩.৪-০-২৮-০, আবু হায়দার ২-০-২৫-০, নবি ৪-০-২৮-২।