শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ৪:১৩:২৭ অপরাহ্ন
৫৩ দিনে শ্বাসতন্ত্রের রোগী ৫০ হাজার
ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩ লাখ ২৬ হাজার
জালালাবাদ রিপোর্ট : নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় শীত নেমেছে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অসুখসহ বাড়ছে বিভিন্ন রোগ। বেশি অসুস্থ হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। শিশু হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড় বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এক বিবরণীতে বলা হয়, ১৪ নভেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৩ দিনে সারাদেশে ৪৯ হাজার ৫৬ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন মারা গেছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ২৬ হাজার ৯৬৫ জন। মারা গেছেন তিনজন।
বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী চট্টগ্রামে। এ বিভাগে ১৪ নভেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ হাজার রোগী এ রোগে ভুগছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে (মহানগর ব্যতীত) ১১ হাজার ৩৬২ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন।
ময়মনসিংহে তিন হাজার ৫৮২ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ৮৩৬ জন, রংপুরে ১ হাজার ৪৭২ জন, খুলনায় ৬ হাজার ৬১৭ জন, বরিশালে ৩ হাজার ৩২১ জন ও সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৮৬৬ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে মারা যাওয়া ৭৩ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রামের বাসিন্দা। এ বিভাগে মারা গেছেন ৪৯ জন। এছাড়া ময়মনসিংহে ২০ জন, খুলনায় দুজন ও বরিশালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি বিভাগগুলোতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ দুই লাখ ২৮ হাজার ৫২১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ১৪ নভেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি সময়ের মধ্যে কেউ মারা যাননি। তবে চট্টগ্রাম বিভাগে এসময়ে ডায়রিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর বিভাগটিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ২৮৬ জন।
এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ হাজার ৬৯৪ জন, রাজশাহীতে ১৩ হাজার ১১৫ জন, রংপুরে আট হাজার ৪০৫ জন, খুলনায় ১৬ হাজার ৬০৫ জন, বরিশালে ১০ হাজার ৩৭৬ জন ও সিলেট বিভাগে ৬ হাজার ৯৬৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে, চলতি শীত মৌসুমে সারাদেশে ঠান্ডাজনিত অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনস (এআরআই) এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। বিভাগটিতে ৫২ জন মারা গেছেন। ১৪ নভেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে তাদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে যাওয়ায় রোগের তীব্রতা বাড়ছে এবং এতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। দ্রুত চিকিৎসা নিলে এবং সচেতন থাকলে এসব রোগে আক্রান্ত কম হবে। মৃত্যুও কমে আসবে।