বাড়লো বিদ্যুতের দাম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ৮:২৬:২৫ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) পাশ কাটিয়ে নির্বাহী আদেশে বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম। প্রতি ইউনিটে গড়ে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ শতাংশ। গত ১৪ বছরে এ নিয়ে ১১তম বারের মতো গ্রাহক পর্যায়ে বাড়ল বিদ্যুতের দাম। নতুন দাম জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে গত নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ায় বিইআরসি। এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়। ১৪ বছরে এটি ছিল দশম দফায় পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি। এরপর ডিসেম্বর থেকেই খুচরা দাম বাড়াতে বিইআরসির কাছে আবেদন করে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। ৮ জানুয়ারি এসব আবেদন নিয়ে শুনানি করে বিইআরসি। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শুনানি-পরবর্তী মতামত জানাতে বলা হয়। এরপর নতুন দাম ঘোষণা করার কথা বিইআরসির। তার আগেই সরকারের নির্বাহী আদেশে দাম বাড়ানো হলো।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জারি করা বিদ্যুৎ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রজ্ঞাপনের কোনো বিধানের ব্যাখ্যা বা কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে তা বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠাতে হবে। বিদ্যুৎ বিভাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। বিদ্যুতের নতুন বিল হার ও বিবিধ সেবার ফি জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
বিইআরসির চেয়ারম্যান আবদুল জলিল গণমাধ্যমে বলেন, সরকার তার আইনি ক্ষমতায় দাম বাড়িয়েছে। এখানে কমিশনের কিছু বলার নেই। তবে কমিশনের শুনানি যেহেতু হয়েছে, একটা আদেশ ঘোষণা করতে হবে। ১৫ জানুয়ারি কমিশন সভা করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
দাম বাড়ানোর ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সংশোধনের সময় বলা হয়েছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে দাম বাড়াবে সরকার। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো সরকার এ ক্ষমতার প্রয়োগ করল।
দেশের সরকারি-বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চুক্তি অনুসারে নির্ধারিত দামে বিদ্যুৎ কিনে নেয় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এরপর তারা উৎপাদন খরচের চেয়ে কিছুটা কম দামে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কাছে বিক্রি করে। ঘাটতি মেটাতে পিডিবি সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নেয়। তবে বিতরণ সংস্থাগুলো কোনো ভর্তুকি পায় না। তারা নিয়মিত মুনাফা করছে। গত অর্থবছরেও মুনাফা করেছে বিতরণ সংস্থাগুলো।
তথ্য-পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের সময় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় মূল্য ছিল ৩ টাকা ১৫ পয়সা। ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ১১ দফায় দাম বাড়ানোর ফলে বর্তমানে ইউনিটপ্রতি গড় মূল্য দাাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৫৬ পয়সা। অর্থাৎ এরই মধ্যে বর্তমান সরকার ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১২৬ দশমিক ৪০ শতাংশ বাড়িয়েছে। এবার ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ১০ পয়সা বাড়ানো হলে আওয়ামী লীগের তিন মেয়াদ মিলিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ার হার দাঁড়াবে ১৬১ দশমিক ২৬ শতাংশ। আগামী এক বছরে সরকার বিদ্যুতের দাম আর না বাড়ালেও প্রতি পাঁচ বছর মেয়াদে গড়ে মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে প্রায় ৫৪ শতাংশ।