গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:৩২:৪৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বলেছেন, গণতন্ত্র এবং সার্বজনীন মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিষয় দুটির অবস্থান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। তাই এ নিয়ে বিশ্বের যেখানেই সমস্যা সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র কথা বলে, প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারদের সাথে বাইডেন প্রশাসন খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উন্মুখ হয়ে আছে জানিয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুক্তভাবে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা (ফ্রিডম অব স্পীচ) এবং এক বা সম্মিলিতভাবে মতামত, আইডিয়া কিংবা চিন্তা জনসমক্ষে শেয়ার করার স্বাধীনতার (ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন) পক্ষেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান।
রোববার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সমন্বিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডোনাল্ড লু এসব কথা বলেন। লু বলেন, মন্ত্রী-সচিবের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু আমাদের বন্ধু সে কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আমরা কীভাবে আরও অর্থবহ করতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ক্ষেত্রে (তাদের কাছ থেকে) ভালো ও যৌক্তিক পরামর্শ পেলে আমরা অবশ্যই গ্রহণ করবো। আমাদের কোথাও দুর্বলতা চিহ্নিত হলে আমরা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করবো। একটি স্বচ্ছ, সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী মোমেন বলেন, ভালো নির্বাচন আমরাও চাই। আওয়ামী লীগ সবসময় ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ ভোটের মাধ্যমে সরকারে এসেছে কখনো বুলেটের মাধ্যমে আসেনি মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, জনরায়ের প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে। বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, যেহেতু তারা বন্ধু, তাই আমরা খোলামেলা আলোচনা করতে পারি। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তি চায়। তার ভাষ্যটি ছিল এমন ‘আমরা শান্তি চাই। বিশ্বের সব জায়গায় শান্তি যাতে প্রতিষ্ঠিত হয়, সে জন্য আমরা অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করি।’
শুরুতে বাংলাদেশ নিয়ে বাংলায় যা বলেন মার্কিন মন্ত্রী: ব্রিফিংয়ের শুরুতে বাংলায় সালাম দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন মার্কিন সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। সেখানে বলেন, মনোমুগ্ধকর নদীমাতৃক এবং অতিথিপরায়ণ মানুষের দেশ বাংলাদেশে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। আমি এখানে এসেছি, আমাদের দুই দেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতে, যখন বিশ্ব শান্তি ও ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করে চলেছে।
র্যাব সংস্কার ও বিচার বহির্ভূতহত্যাকাণ্ড কমায় সন্তোষ : এদিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর র্যাব সংস্কারে উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে সহকারী মন্ত্রী ডেনাল্ড লু বলেন, এতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা নেমে এসেছে আশাতীত ভাবে। তিনি বলেন, র্যাব প্রসঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। গত সপ্তাহের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে চিহ্নিত করা হয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে অসামান্য উন্নতি হয়েছে। এটা খুবই ভালো কাজ। এ উন্নতির কথা আমরাও স্বীকার করছি। এটা প্রমাণিত হয়, র্যাব সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও আইন প্রয়োগের দায়িত্ব মানবাধিকার রক্ষা করেই করতে পারবে। এ সময় অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যান্য সব দেশের আগে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পাবে। জিএসপি ফেরতে যে সব শর্ত রয়েছে তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে কাজ করছে জানিয়ে লু বলেন, এই তালিকার অনুমোদন পেলে প্রথম দেশ হবে বাংলাদেশ।