বড়লেখায় প্রাইমারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ৫:৫৬:০৯ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি:
বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ মুছেগুল কয়েছ আহমদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিবির আহমদের বিরুদ্ধে যেন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় জমেছে। ছাত্রী-ছাত্রীদের নির্যাতন, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার, এসএমসি’র সহসভাপতিসহ সদস্যবৃন্দ ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণ, জাতীয় দিবস যথাযথভাবে পালন না করা, স্কুলের উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত পাঁচটি লিখিত অভিযোগ তার বিরুদ্ধে তদন্তাধীন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি আব্দুল জলিলের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিবির আহমদ ২০১৮ সালে দক্ষিণ মুছেগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি নিজের ইচ্ছামাফিক স্কুল পরিচালনা করে স্কুলের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে চলেছেন। সরকারি স্লিপ বরাদ্দ ও অন্যান্য অনুদান ব্যবহারে অনিয়ম দুর্নীতি চালিয়ে যান। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটিকে অবহিত ও অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যক্রম চালানোর তাগিদ স্বত্ত্বেও তিনি তার স্বেচ্ছাচারিতা থামাননি। তার অশিক্ষক সুলভ আচরণে স্কুলের সম্মানহানী হচ্ছে। তিনি ছাত্রছাত্রীদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও চুল ধরে উপরে উঠিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। বাবা-মা তুলে গালি দেন এবং বেত্রাঘাত করেন। প্রকৃতির ডাকে প্রশ্রাব-পায়খানায় যেতে চাইলেও শিক্ষার্থীদের আটকে রাখেন। এতে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তার নির্যাতন ও গালি-গালাজের ভয়ে-আতংকে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে ঝরে পড়েছে।
বিভিন্ন জাতীয় দিবসও তিনি সঠিকভাবে পালন করেন না। বিধি বর্হিভূতভাবে বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের কিছু অংশের ইট, রড, লোহা লাক্কড় ও সাউন্ড বক্স নিজের বাড়িতে নিয়ে গেছেন। নিষেধ স্বত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি’র নামে টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নিয়মিত সভা না করে মনগড়াভাবে স্কুল পরিচালনা করেন। স্লিপের টাকায় কোন কাজ না করেই বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আব্দুল জলিল জানান, ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগের অন্ত নেই এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিভাবক মহলও তার আচরণে অতিষ্ট। ইতিপূর্বে চারজন অভিভাবক তার বিরুদ্ধে ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে তিনিও একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শিবির আহমদ সোমবার বিকেলে জানান, এসব অভিযোগের ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। তবে কয়েকদিন আগে একটি অভিযোগ তদন্ত করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার। এসএমসির সহসভাপতি অভিভাবকতুল্য। কোন অনিয়ম-দুর্নীতি করে থাকলে তিনি আমাকে বলতে পারতেন। কোন কিছু না বলেই ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দেওয়া ঠিক হয়নি।
ইউএনও সুনজিত কুমার চন্দ জানান, এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার দপ্তরে চারটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্ত করে এসব অভিযোগের প্রতিবেদন দিতে তিনি উপজেলা শিক্ষা (প্রাথমিক) অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন।