কুষ্ঠ রোগের ঝুঁকিতে মৌলভীবাজারসহ ৯ জেলা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১৫:০১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের মৌলভীবাজার দেশের ৯ জেলা কুষ্ঠ রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। অবহেলা বা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়ায় এ রোগে আক্রান্তের ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। প্রথম পর্যায়ে শনাক্ত ও সুচিকিৎসা পেলে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। কুষ্ঠ রোগ নির্মূলে সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে দেশে ২ হাজার ৯৭৪ জনের কুষ্ঠ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ২০০ জন প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়েছেন। ২০২১ সালে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৭২। তাঁদের মধ্যে শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়েছেন ১৬৫ জন। ২০২০ সালে ২ হাজার ৭২৪ রোগীর মধ্যে প্রতিবন্ধিতার শিকার হন ১৩৭ জন। তবে ২০১৯ সালে কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। ওই বছর ৩ হাজার ৬৩৮ জনের কুষ্ঠ শনাক্ত হয়। প্রতিবন্ধিতার শিকার হন ২৫২ জন। ১০ বছর ধরে দেশে বছরে গড়ে তিন হাজার কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত হচ্ছেন।
মৌলভীবাজারে সবচেয়ে বেশি রোগী : দেশের ৯টি জেলায় কুষ্ঠ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী জেলা চা-বাগান ও হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত মৌলভীবাজার তালিকার ১ নম্বরে রয়েছে।
মৌলভীবাজারের সির্ভিল সার্জন সূত্র জানায়, ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে জেলায় বর্তমানে এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৬৬০ জন। এর মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা বেশি।
এ রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা অন্য জেলাগুলো হলো- দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, পঞ্চগড়, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, জয়পুরহাট ও মেহেরপুর। এসব জেলায় প্রতি লাখে পাঁচজন বা তার বেশি মানুষ কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকাসহ ছয় জেলা। নিম্ন ঝুঁকিতে আছে আরও ৩৪টি জেলা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুষ্ঠ রোগী হিসেবে শনাক্ত হওয়ার ভয়ে আক্রান্ত অনেকে চিকিৎসকের কাছে যান না। কেউ কেউ কবিরাজসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নেন। এসব কারণে সব রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনতে সময় লাগে। ততদিনে রোগ অনেক দূর গড়ায়। এতে অনেকেই প্রতিবন্ধিতার শিকার হন। এ বিষয়ে মানুষের মাঝে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
এ পরিস্থিতিতে রোববার পালিত হয়েছে বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস। কুষ্ঠ রোগের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ দিবস পালন করা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য- ‘এখনই কাজ শুরু করি, কুষ্ঠ রোগ নির্মূল করি’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনো দেশে কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা প্রতি ১০ হাজারে একজনের নিচে নেমে এলে দেশটিকে ‘কুষ্ঠ রোগমুক্ত’ ঘোষণা করা যায়। সেই হিসেবে ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ‘কুষ্ঠ রোগমুক্ত’ দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনও প্রতি বছর বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পুরোনো কুষ্ঠ রোগ প্রতিরোধ আইনটি ২০১১ সালে সংশোধন করে সরকার। পুরোনো আইনে এ রোগে আক্রান্তদের বাধ্যতামূলক সরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হতো।