ঢাকার বাতাসে বিষাক্ত কণা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৭:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : গবেষকরা ঢাকার বাতাসকে বিপজ্জনক বলছিলেন। এবার গবেষকরা ঢাকার বাতাসে বিষাক্ত অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা বা মাইক্রো প্লাস্টিকের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। ঢাকাবাসীর নিশ্বাসের সঙ্গে ওই কণা শরীরে প্রবেশ করছে। এতে ক্যানসার, শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগ তৈরি হচ্ছে, যা ওষুধেও দূর হবে না বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। ফলে এর উৎস নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় ঢাকার মোট ১৩টি এলাকার বাতাসের নমুনা নেওয়া হয়। এলাকাগুলো হলো ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, মোহাম্মদপুর, মিরপুর-১৩, পশ্চিম কাজীপাড়া, শান্তিনগর, আরামবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ও ফজলুল হক হল, খিলক্ষেত, ফার্মগেট, মহাখালী, মুগদা, বাসাবো। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার বাতাসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।
গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম। তিনি গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, আপনি চান বা না চান, নিশ্বাসের সঙ্গে ওই ক্ষতিকর উপাদান প্রবেশ করছে। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং যাতে তা প্রকৃতিতে ফিরে না যায়, সে লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা করা হলেও তার কোনো প্রয়োগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। যে কারণে এই দূষণ বেড়েই চলেছে।’
বিশ্বের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালসহ বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর হিসাবে, গত দুই বছর ঢাকা সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হয়ে উঠেছে। গত জানুয়ারি মাসের পুরোটা সময়জুড়ে ঢাকার বাতাস বিপজ্জনক ও দুর্যোগপূর্ণ ছিল।
গবেষণায় আরও বলা হয়, বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মোট প্লাস্টিক বর্জ্যের ২৫ শতাংশ ছড়িয়ে পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। যার ৯১ শতাংশ ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। এই অঞ্চলে মোট তৈরি হওয়া ৩ কোটি ২২ লাখ টন বর্জ্যের ১২ শতাংশ হচ্ছে প্লাস্টিক। যার ৭৫ শতাংশ মূলত অপরিকল্পিতভাবে মাটি ও পানিতে ফেলা হয়। এভাবে চলতে থাকলে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০৫০ সালের মধ্যে বছরে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ছয় কোটি টনে। এখন থেকে যদি প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাতেও বিশ্বের প্রতিবেশ ব্যবস্থায় ৫০০ কোটি টন প্লাস্টিক রয়ে যাবে। একটি প্লাস্টিক কণা প্রকৃতি অন্তত ৪০০ বছর টিকে থাকে।