বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু আয়াত, চিকিৎসায় প্রয়োজন ২২ কোটি টাকা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:১৭:০৮ অপরাহ্ন
সাত মাস বয়সি সিলেটের শিশু আয়াত হক বিরল স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি (এসএমএ) রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। শহরতলীর মেজরটিলা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জুনেদ ও ব্যাংক কর্মকর্তা ফারজানা দম্পতির মেয়ে আয়াত। ডাগর চোখের মিষ্টি হাসির এই কোমলমতি শিশুটি এখন শুধু বিছানায় শুয়ে থাকে, কোনো নড়াচড়া করতে পারে না। জিনগত সমস্যায় জন্ম নেওয়া এই রোগে শিশুর ঘাড় শক্ত থাকে, স্বাভাবিকভাবে সোজা হতে এবং হাত-পা স্বাভাবিকভাবে নাড়াতে পারে না। সাথে থাকে শ্বাসকষ্ট।
চিকিৎকরা বলছেন, পেশির সঞ্চালনকে নিয়ন্ত্রণ করে যে মোটর নিউরোন, তা নষ্ট হওয়াই জিনঘটিত এই বিরল রোগের কারণ। রোগের তীব্রতা অনুযায়ী- টাইপ ওয়ান থেকে ফোর পর্যন্ত হয় ‘এসএমএ’ রোগ। বাংলাদেশে এর কোনো চিকিৎসা নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে একটি কোম্পানি কয়েক মাস আগে এর ওষুধ বাজারে নিয়ে আসলেও তা কেনা সাধারণ মানুষের সাধ্যাতীত। বর্তমানে ‘এসএমএ’ প্রতিরোধক ইনজেকশনের দাম ২২ কোটি। এছাড়াও এ রোগ নিরাময়ে ‘রিসডিপ্লাম’ নামের মুখে খাওয়ার ওষুধ রয়েছে। এটি এক ধরনের জিন থেরাপি। তবে প্রতি বছরে ৪০ লাখ টাকার ওষুধ। আর খাওয়াতে হয় মৃত্যু পর্যন্ত। ফলে এত ব্যয়বহুল ওষুধ বা চিকিৎসা দিতে না পেরে আক্রান্ত শিশুদের স্বজনরা দিশেহারা।
শিশুর বাবা-মা বলেন জন্মের ২-৩ মাসের মাথায় আয়াতকে হাত-পা ও ঘাড় স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে না দেখে তারা মেয়েকে সিলেটের একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
তারা প্রাথমিকভাবে চেকআপ করে জানান শিশুটি ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি’ বা ‘এসএমএ’ রোগে আক্রান্ত। পরে বাংলাদেশে এর পরীক্ষা না হওয়ায় আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য রক্ত পরীক্ষা করতে ভারত পাঠানো হয়। সেখান থেকে একমাস পর রিপোর্ট মিলে আয়াত ‘এসএমএ’ রোগে টাইপ ওয়ানে আছে। তখন তারা জানান বাংলাদেশে এর কোনো চিকিৎসা বা ওষুধ নেই।
পরে তারা আয়াতকে নিয়ে যান ‘এসএমএ’ রোগ বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজির চিকিৎসক ডা. জোবায়দা পারভিনের কাছে। তিনি পরামর্শ দেন বিদেশি ওষুধ কোম্পানি ‘নোভার্টিস’ বরাবরে একটি আবেদন করার জন্য। কোম্পানিটি প্রতি বছর লটারির মাধ্যমে বিশ্বের ‘এসএমএ’ আক্রান্ত দুই শিশুকে ২২ কোটি টাকা দামের ‘জোলগেনসমা’ নামের ইনজেকশনটি বিনামূল্যে দিয়ে থাকে।
আয়াতের মা ফারজানা জানান আমরা ‘নোভার্টিস’ বরাবরে আবেদন করেছি। কিন্তু সারা বিশ্বের আবেদনকারীদের মধ্য থেকে তারা লটারির মাধ্যমে দুই শিশু নির্বাচিত করে। এখন লটারিতে আমার আয়াতের নাম উঠবে কি না সেটা তো বলা যায় না। যদি না উঠে তবে কি চোখের সামনেই আমাদের সন্তান মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে? আমরা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ব্যাপারে শিশুর বাবা জুনেদের সাথে ০১৭২৬-৬৩৭৭৭১ এই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। বিজ্ঞপ্তি