খুনের আগের দিন মধ্যরাত পর্যন্ত বাইরে ছিলেন সজিব-সোনিয়া
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৩৫:১৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটি নাটকের অভিনেত্রী ও টিকটকার তরুণী সোনিয়া আক্তার হত্যাকাণ্ডে মামলা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই পারভেজ আহমদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় নিহতের মামাতো ভাই সজীব আহমদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত সজিব গা ঢাকা দেয়। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব-৯। সোমবার রাতে রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সজিব হবিগঞ্জ জেলার আজমেরীগঞ্জ উপজেলার শরীফনগর গ্রামের মো. নুরুদ্দিনের ছেলে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান র্যাব-৯ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. মোমিনুল হক জিডি-পি। তিনি জানান, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে থেকেই সোনিয়াদের বাসায় অবস্থান করে সজিব। এ সময় সোনিয়াকে নিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায়ও যায়। ঘটনার আগের দিন (১১ ফেব্রুয়ারি) সোনিয়া চাকরির সন্ধানে সজিবকে নিয়ে বিয়ানীবাজার যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে সিলেট নগরীর শেখঘাটে সোনিয়ার অসুস্থ খালাকে দেখে রাত ১২টার দিকে বাসায় ফিরে তারা। পরদিন সকালে সোনিয়ার সৎ বাবা অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতাল হতে সোনিয়ার মা বাসায় ফিরে সোনিয়াকে দেখতে না পেয়ে তার শয়নকক্ষে ঢুকে বিছানায় রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক মোমিনুল হক আরো জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর র্যাব-৯ ছায়া তদন্তের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সজিবের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয় র্যাব। পরে সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানাধীন সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতার সজীবের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ঢাকায় মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে শিশু অপহরণ ও সহায়তার ঘটনায় ঢাকার ভাষানটেক থানায় একটি মামলা রয়েছে। এ মামলায় সজীব জেলও খেটেছে।
নিহতের স্বজনদের তথ্য অনুযায়ী, সোনিয়া আক্তার স্থানীয় আঞ্চলিক নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি টিকটক করতেন। তার কাছে বেশ কিছু টাকা ছিলো। তাদের বাড়িতে প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে তাদের মামাতো ভাই সজীব অবস্থান করছিলো। গত শনিবার রাতে সোনিয়ার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে যাতায়াতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। গত রোববার সকালে বাড়িতে সোনিয়া, তার ভাবি ও সজীব ছিলো। রোববার বেলা ১২টার দিকে সোনিয়ার মা বাড়িতে ফেরেন। তখন মা ও ভাবি সোনিয়ার কক্ষে গিয়ে খাটের ওপর তার গলাকাটা লাশ দেখতে পান। তাদের দাবি, তাকে হত্যা করে সজীব টাকাপয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়।