১৪ কোটি টাকার রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি রেখে ঢালাই
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই ব্রিজ থেকে দায়ার বাজার হয়ে বালুচর পর্যন্ত রাস্তার কাজ চলছে। ৩ কিলোমিটার রাস্তায় আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের প্রথম দিক থেকে। প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঈনুল হক এন্ড এম রহমান (জেভি) কাজ নেয়। কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
কাজের শুরু থেকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠতে থাকে। রাস্তা খুঁড়ে পাথর বিক্রি, পানি যাতায়াতের কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়া, রাস্তার পাশের শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া, ঢালাই এর আগে বেজমেন্টে বালু পাথর সমান সমান থাকার কথা থাকলেও পাথরের পরিমাণ দেওয়া হয় অনেক কম। এত সব অভিযোগ থাকার পরেও কাজ শেষ হয়নি নির্ধারিত সময়ে। ২০২২ সালের ২০ আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার কথা। বন্যায় রাস্তার প্রায় ১শত গজ সমপরিমাণের গাইডওয়াল ক্ষতি হওয়ায় ২০২২ সালে ঢালাই এর কোন কাজ করা হয়নি। ফলে দ্বিতীয় মেয়াদে বাড়ানো হয় কাজের মেয়াদ। এ বছর রাস্তার বালুচর অংশ থেকে শুরু হয় ঢালাই এর কাজ। ধীরগতির কাজের কারণে প্রায় দেড় মাসেও আধা কিলোমিটার ঢালাই দেওয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি রেখে দেওয়া হচ্ছে আরসিসি ঢালাই। নির্মাণাধীন এই রাস্তায় ৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। এর একটি খুঁটিতে আছে ২টি ট্রান্সফরমার। রাস্তার মধ্যে খুঁটি রেখে ঢালাই না দেওয়ার জন্য কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে নিষেধ করা হয় এবং ঢালাই এর আগে এই খুঁটিগুলো স্থানান্তরের সরকারি ফি জমা দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়ে জানানো হয়। কিন্তু এলজিইডি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই আদেশ অমান্য করে রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই ঢালাই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইনামুল কবীর জানান, খুঁটির চতুর্দিকে কিছু অংশ ঢালাই না দিয়ে অন্য অংশ ঢালাই দেওয়ার জন্য বলে দিছি। রড কেটে পরবর্তীতে আবার জোড়া দেওয়া হলে সেটা কি একসাথে ঢালাই দেওয়ার মতো হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সামান্য একটু অংশে জোড়া দেওয়া এটা তেমন কিছু না। এতে রাস্তার কোন ক্ষতি হবে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দয়ার বাজার ফয়সাল মার্কেটের সামনে একটি কাঠের বৈদ্যুতিক খুঁটি রাস্তায় রেখেই আরসিসি ঢালাই করা হয়েছে। দয়ার বাজার পয়েন্টে এবং কলাবাড়ি স্কুলের পাশে রাস্তার মাঝখানে আছে আরো ২টি খুঁটি। এ ছাড়াও বেজমেন্টের বালুর সাথে ঢালাইয়ের ভাঙ্গা অংশ ও ইটের খোয়া মিক্স পাওয়া যায়।
রাস্তায় খুঁটি রেখে ঢালাই দেওয়ার বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মৃণাল কান্তি চৌধুরী বলেন, গত বছরের ১৩ এপ্রিল পোল স্থানান্তরে জন্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখনও টাকা পরিশোধ করা হয়নি। টাকা জমা না দিলে আমি খুঁটি সরাতে পারি না।
সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইনামুল কবীর বলেন, রাস্তার ইস্টিমেটে বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তরের টাকা ধরা হয়নি। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে খুঁটির টাকা জমা দেওয়ার জন্য বলেছি। পরবর্তীতে ইস্টিমেটের মধ্যে এই টাকা যোগ করে দেওয়া হবে। খুব শীগ্রই রাস্তা থেকে বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তর করা হবে বলেও তিনি আশ্বস্থ করেন।