ফুটপাত ছাপিয়ে মূল সড়কে জমজমাট বাজার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:০০:১৩ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট নগরীর ব্যস্ততম এলাকা বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার সড়ক। যানজট এড়ানোর কথা বলে এই সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এতে এই পথ দিয়ে নগরবাসীকে মূলত চলাচল করতে হয় পায়ে হেঁটে। কোনোভাবেই যাতে রিকশা না ঢুকতে পারে তা পাহারা দিতে সড়কের প্রতি মাথায় রয়েছে সিসিকের নিজস্ব বাহিনী। তবে সিটি কর্পোরেশনের এই তৎপরতায় নিরাপদ ব্যবসার সুযোগ হয়েছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের।
যদিও এতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলে দাবি টেক্স-ভ্যাট আর ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করা মার্কেট ও স্থায়ী দোকানীদের। রিকশা চলাচল বন্ধ, অল্প কিছু সিএনজি আর মোটরসাইকেল চলাচলের ফলে রাস্তাটি প্রায় সারাদিনই ফাঁকা থাকে। জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা গলি থেকে কোর্ট পয়েন্ট পর্যন্ত এই রাস্তায় গড়ে উঠেছে জমজমাট বাজার। রাস্তার দুইধারে বিকেল থেকে বসে প্রায় অর্ধশতাধিক ভাসমান দোকান। আগে তা কেবল ফুটপাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা নেমে এসেছে রাস্তায়। ফাঁকা রাস্তা, মাঝেমধ্যে দুই একটি মোটরসাইকেল আর সিএনজি যাচ্ছে। তাই অনেকটা নির্বিঘ্নে এখানে কেনাবেচা করতে পারছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। খাট, টেবিল পেতে আর মেইন লাইন থেকে তারের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে লাইটিং করে রীতিমতো বড়োসড়ো বিপনী বিতানের মতো এখানে জমে ওঠে ব্যবসা। বিকেল থেকে শুরু হয়ে তা চলে গভীর রাত অব্দি। সাধারণত দিনের কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরা লোকজনই এই বাজারের মূল ক্রেতা। এই এলাকার রয়েছে দুটি স্কুল সরকারি কিন্ডার গার্টেন প্রাথমিক স্কুল এবং সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বেশ কয়েকদিন সরেজমিন দেখা যায় চারটার দিকে স্কুল দুটি ছুটি পর্যন্ত অপেক্ষা করেন ভাসমান দোকানীরা। ছুটির কিছুটা পর স্কুলগুলোর সীমানা প্রাচীর, ওপাশের পুরান লেনের গলি এবং আশপাশের চিপাচাপা থেকে আস্তে আস্তে খাট, কাঠ, টেবিল বের করা শুরু হয়। তারপর ধীরে ধীরে ফুটপাতে পসরা সাজানো শুরু হয়। সন্ধ্যার পর আসতে শুরু করেন দু চাকার গাড়ি নিয়ে অন্যান্য বিক্রেতারা। দু চাকার বিক্রেতাদের গাড়িতেই ব্যাটারির মাধ্যমে থাকে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা। খাট টেবিল সাজিয়ে বসা বিক্রেতারা আলোর ব্যবস্থা করেন মেইন লাইন থেকে। কিন্তু কাদের মাধ্যমে এই সংযোগ তারা নিয়ে থাকেন তা বলতে চাননি। এখানে বসা ও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য নিয়মিত মাসোয়ারাও দিতে হয় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে বললেও কাদের মাসোয়ারা দেন তা বলেন নি।
তবে এখানে ব্যবসা করার সুযোগ পেয়ে কেউ কেউ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন। তারা বলেন মেয়র যদি এই রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধ না করতেন তবে তাদের পক্ষে এতো সহজে এখানে ব্যবসা করা সম্ভব হতো না। কারণ রিকশা না চলায় লোকজন হেঁটে যেতে হয় আর হাঁটার পথে যাওয়া লোকজনই তাদের মূল ক্রেতা। রাস্তা ফাঁকা থাকায় ক্রেতারা আরামে জিনিস কিনতে পারেন। তারা বলেন করোনায় অনেকেই দোকান ব্যবসা হরিয়ে পথে বসেছিলেন প্রায়। এখানে যারা ব্যবসা করেন তাদের অনেকেই সেইসব ব্যবসায়ী যাদের নতুন করে কোনো মার্কেটে দোকান দেওয়ার সামর্থ নেই। বিকেলের দিকে দোকান পেতে বসলেও ব্যবসা জমে ওঠে মূলত সন্ধ্যার পর। গতকাল সরেজমিন দেখা যায় কাপড়চোপড় থেকে নিয়ে ছোটোখাটো তৈজসপত্র কী নেই এই বাজারে। রাস্তার পশ্চিম পাশে বসে বিভিন্ন ধরনের কাপড় আর পূর্ব পাশে ফলমূল এবং চামচ, ছুরি-চাকু, ফুলদানি, ঘটিবাটি ইত্যাদির দোকান। দু চাকার গাড়িগুলোতে থাকে মোবাইল এক্সেসরিজ, চিরুনি, কাঁচি, ছোটোখাটো প্লাস্টিক পণ্য।