জগন্নাথপুরে মেয়াদ শেষ হলেও শেষ হয়নি বাঁধ নির্মাণ কাজ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ৮:৫১:৩৪ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় নলুয়ার হাওর ও মইয়ার হাওরসহ অন্যান্য হাওরের আগামী বোরো ফসল অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে বিস্তৃত হাওর ঘুরিয়ে এবার ২৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পৌণে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৭টি পিআইসি প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ১৫ ডিসেম্বর বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো পুরো কাজ শেষ হয়নি।
গত ১৫ ডিসেম্বর কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও মূলত সকল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় জানুয়ারিতে। এ সময় প্রথম বিল পেয়েই বাঁধ নির্মাণ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন পিআইসিরা। প্রায় ২ মাস কাজ করার পরও দ্বিতীয় বিল না পাওয়ায় টাকার অভাবে পিআইসিরা রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েন। মাটিকাটার এস্কেভেটর মেশিন, মাটি বহনের ট্রাকের ডিজেল ও শ্রমিকদের খোরাকির টাকা দিতে গিয়ে অনেকে ধারদেনা ও সুদে টাকা এনে ঋণগ্রস্ত হয়ে যান। এর মধ্যে ১টি বাদে গড়ে প্রায় সকল প্রকল্পের ৪০ থেকে ৮০ ভাগ মাটি কাটার কাজ শেষ হয়েছে। প্রথম বিল হিসেবে মাত্র ২৫ ভাগ টাকা দিয়ে অধিকাংশ কাজ করিয়ে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে দ্বিতীয় বিল প্রদান করা হয়। বিল পেয়ে তাদের দেহে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
মঙ্গলবার সরেজমিনে নলুয়ার হাওরের পশ্চিমপ্রান্ত ভূরাখালি ও হালেয়া গ্রাম এলাকায় ৪ থেকে ৯নং প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ৪নং প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পের মাটি কাটা কাজ শেষ হয়। তবে ৬, ৮ ও ৯ নং প্রকল্পে মাটিকাটা চলছে। সরকারি বেঁধে দেয়া সময় শেষ হলেও বাঁধের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকসহ জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ৪নং পিআইসি কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য রণধীর কান্তি দাস রান্টু বলেন, আমার প্রকল্পের দোবরা ঘাস লাগানোসহ পুরো কাজ শেষ হয়ে গেছে। ৬নং পিআইসি কমিটির সভাপতি নোমান আহমদ রুমেন ও সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম এবং ৮নং পিআইসি কমিটির লোকজন জানান, আজকের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবো’র জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী (এসও) মোহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার সকল হাওর এখন ঝুঁকিমুক্ত। এ পর্যন্ত ৪৭টি প্রকল্পের মধ্যে ৩৫টি প্রকল্পের মাটি কাটার কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি প্রকল্পের দোবরা লাগানোসহ পুরো কাজ শেষ হয়। বাকি ১২টি প্রকল্পের কাজ দ্রুত চলছে। আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে শেষ হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আরো এক সপ্তাহ বর্ধিত সময়ের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হচ্ছে। আশা করছি, বর্ধিত সময়ের মধ্যে আর কোন কাজ বাকি থাকবে না। পিআইসিদের দ্বিতীয় বিল প্রদানে বিলম্বের কারণ হিসেবে তিনি জানান, ফান্ডে টাকা না থাকায় বিলম্ব হয়েছে। অবশেষে ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি সকল পিআইসিকে দ্বিতীয় বিল প্রদান করা হয়েছে।