জগন্নাথপুরে হাওরের কালামাটি দিয়ে লাকড়ি তৈরির হিড়িক
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২৩, ৮:৪৭:৩২ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় নলুয়ার হাওরে কয়লা মাটি (স্থানীয় ভাষায় কালামাটি) পাওয়া যাচ্ছে। এসব কালামাটি দিয়ে জ্বালানি হিসেবে লাকড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে। যে কারণে স্থানীয়দের কাছে এসব কালামাটির কদর অনেক বেশি। প্রতি বছরের হেমন্ত মৌসুমে কালামাটি সংগ্রহ করে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের লাকড়ি বানানো হয়। যা দিয়ে সারা বছর রান্নার কাজ করা হয়ে থাকে।
প্রতি বছরের মতো এবারো লাকড়ি তৈরির জন্য হাওর থেকে কালামাটি উত্তোলন ও লাকড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, নলুয়ার হাওর পারের গ্রাম কবিরপুরের নারী-পুরুষ জনতা হাওরের ছোট ছোট খাল ও জমির খাল থেকে কালামাটি উত্তোলন করে বিভিন্ন রকমের লাকড়ি বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
এ সময় নারী-পুরুষসহ স্থানীয়রা জানান, এসব মাটি দেখতে গরুর গোবরের মতো। গোবর দিয়ে তৈরি লাকড়ি হালকা হয়। তবে মাটির তৈরি লাকড়ি কাঠের মতো শক্ত ও ভারি হয়। এসব লাকড়ি অন্য লাকড়ির তুলনায় রান্নায় কম লাগে। তাই এসব মাটির লাকড়ি গৃহিনীরা পছন্দ করেন।
লাকড়ি তৈরির বর্ণনা দিতে গিয়ে তারা বলেন, প্রথমে হাওরের খাল থেকে কালামাটি উত্তোলন করে উঁচু স্থানে স্তুপ করে রাখা হয়। কয়েক দিন পর রোদে শুকিয়ে কিছুটা শক্ত হলে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের লাকড়ি। পরে বেশ কিছু দিন এসব লাকড়ি রোদে শুকাতে হয়। লাকড়ি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে বাড়ির লাকড়ি ঘরে নিয়ে রাখা হয়। যা দিয়ে তারা সারা বছর রান্নাবান্না করেন। গ্রামের অনেক দরিদ্র পরিবারের মানুষজন এসব লাকড়ির উপর নির্ভরশীল। তাই হাওর পারের মানুষেরা সারা বছরের খাবার হিসেবে ধান গোলায় তোলার আগে লাকড়ি তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন। পরে বৈশাখ মাসে ধান কাটা, মাড়াই করা ও গোলায় তোলা নিয়ে হাওর ও মাঠে-ময়দানে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। তখন আর লাকড়ি তৈরির সময় পাওয়া যায় না। যে কারণে এখন তারা লাকড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।