শ্রেণি কক্ষে তালা, মেঝেতে পাঠদান শিশুদের
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২৩, ৯:০০:৪৪ অপরাহ্ন
তাহিরপুর প্রতিনিধি: স্কুলটিতে আছে একটি চার কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ও তিনটি শ্রেণি কক্ষ বিশিষ্ট একটি দু’তলা বিল্ডিং কাম আশ্রয় কেন্দ্র। এর মধ্যে একতলা বিল্ডিংয়ের চারটি কক্ষের মধ্যে তিনটি শ্রেণী কক্ষেই সরকারী বইয়ের গোদাম করে রাখা হয়েছে। এ কারণে তিনটি ক্লাসের শতাধিক কোমলমতি শিশুদের স্কুলে এসে এখন মেঝেতে বসে পাঠদান গ্রহণ করতে হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সঠিকভাবে পাঠদান করাতে পারছে না। এনিয়ে অভিভাবক ও সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এমনি চিত্র দেখা গেছে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বৌলাই নদীর পাড়ে ও তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশেই উজান তাহিরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরেজমিন দেখা যায়, এই বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক, দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তিনটি শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রাক প্রাথমিক ৩০, দ্বিতীয় ৫০ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা এসেই এলোমেলো ভাবে ঘুরাফেরা করছে বিদ্যালয়ে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দু’তলা বিল্ডিংয়ের নিচের মেঝেতে বসে আছে কিছু ছাত্র, আরও কিছু ছাত্র বারান্দায়, কিছু ছাত্র মাঠে ও এদিক সেদিক এলোমেলোভাবে ঘুরাফেরা করছে। অন্য দিকে কিছু ছাত্র স্কুলের পরিত্যক্ত একটি টিন শেডের ঘরে কয়েকটি বেঞ্চে বসে আছে কিন্তু শিক্ষক নেই।
শিক্ষার্থীরা জানায়, শ্রেণীকক্ষে বই রাখার গোদাম করে রাখায় তালাবদ্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরে। তাই আমরা স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে পারি না। স্যাররা আমাদের বলেছে মেঝেতে বসতে চট বিছায়ে। আমরা মেঝেতেই বসে পাঠদান গ্রহণ করি, খুব কষ্ট হয়।
এমন কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক দীলিপ কুমার গাংগুলী জানান, বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণী কক্ষে সরকারী বইসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রি রাখার কারণে তালাবদ্ধ। উর্ধবতন কতৃপক্ষের নির্দেশেই রাখা হচ্ছে। আমাদের কিছু করার নেই। তবে শ্রেণীকক্ষে গোদাম করার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেকের কষ্ট হয় ও পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তিনটি শ্রেণি কক্ষ বন্ধ থাকায় দুটি শ্রেণী কক্ষে কোন রকমে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। এতে সঠিকভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মইনুল হক জানান, বছরের পর বছর ধরে এভাবে স্কুলের শ্রেণি কক্ষ বইয়ের গোদাম করে রাখায় পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল খায়ের জানান, আমি প্রায় দিনই ঐ বিদ্যালয়ে যাই। সেখানে কোনো শ্রেণি কক্ষের সংকট নাই। তবে বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণী কক্ষে সরকারী বই রাখা আছে তা আগামী ৬-৭ দিনের মধ্যে বই বিতরণ করা শেষ হবে। আর যেগুলো থাকবে তা অন্য কোনো স্থানে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।