এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকিট শুরু,কারো কাছে সহজ, কারো কাছে জটিল
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০২৩, ৯:২৩:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধনের পর ট্রেনের টিকেট বিক্রির নতুন পদ্ধতি সারাদেশের মতো সিলেটেও চালু হয়েছে। প্রথম দিন যাত্রীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়লেও এ পদ্ধতি চালুতে খুশি তারা। নতুন পদ্ধতিটি কারও কাছে বেশ সহজ মনে হচ্ছে; আবার কারও জন্য পদ্ধতিটি খুব জটিল হয়ে পড়েছে। তবে নতুন এই নিয়মে টিকেট কালোবাজারি বন্ধ হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার সকাল থেকে সিলেট রেলস্টেশনে আসতে শুরু করেন যাত্রীরা। লাইনে দাড়িয়েও নিবন্ধন না থাকায় ট্রেনের টিকিট কাটতে পারছিলেন না অনেকে। পরে লাইন থেকে বের হয়ে তাঁরা রেলস্টেশনের প্রবেশমুখে স্টেশনের ‘হেল্পডেস্কে’ গিয়ে সহযোগিতা নিচ্ছিলেন। সেখানে তাঁদের মুঠোফোনে খুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করে দিচ্ছিলেন রেলস্টেশনের কর্মীরা। তবে নতুন নিয়মে টিকিট কাটতে গিয়ে যাত্রীরা কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েন। তবে এই পদ্ধতিকে টিকিট কাটতে পেরে অনেকে খুশিও হয়েছেন।
এ বিষয়ে সিলেট রেলস্টেশনে ট্রেনের টিকিট করতে আসা কয়েকজন সাধারণ যাত্রী বলেন, এমন পদ্ধতির ফলে টিকিট কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য কমবে। টিকিট পাওয়া যাবে অনলাইনে কিংবা স্টেশনে গিয়ে।
সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম এমন পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে নির্ভার লাগছে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আগে অনেকে স্টেশনে আসার পর টিকিট না পেয়ে কর্মকর্তাদের সন্দেহের চোখে দেখতেন। সরাসরি কেউ কিছু বলতে না পারলেও ভাবতেন, আমরাই এগুলো বাইরে বেশি দামে বিক্রি করে দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, এখন যে যার টিকিট নিজের ভোটার আইডি অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করে কাটতে পারছেন। এতে কালোবাজারে টিকিট কাটার প্রবণতা কমবে। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সম্পর্কে ধারণাও পাল্টাবে।
সকাল ১০টার দিকে আগামী শনিবারের ঢাকার টিকিট কাটার জন্য সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের এক বাসিন্দা। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও নিবন্ধন না থাকায় তিনি টিকিট কাটতে পারছিলেন না। পরে লাইন থেকে বের হয়ে রেলওয়ের প্রবেশমুখে যান তিনি। সেখানে রেলস্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন করে দিচ্ছিলেন। তিনি ওই অপারেটরের সহযোগিতায় নিবন্ধন করে আবার সারিতে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটেন।
সিলেট রেলস্টেশনের ওই কম্পিউটার অপারেটর বলেন, সকাল থেকে স্টেশনের কয়েকজন যাত্রীদের সেবা দিচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা নিজেরাও। অনেকের খুদে বার্তার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিলেও জন্মতারিখে ভুল করায় ফিরতি খুদে বার্তায় নিবন্ধন হয়ে আসছে না। আবার অনেকে জন্মনিবন্ধন সনদের ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এতে সমস্যা হচ্ছে। এরপরও যাচাই করে সঠিক নিয়মে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন তাঁরা।
এদিকে, বুধবার সকালে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সার্ভারের সাথে আমাদের রেলওয়ের সার্ভারের যোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং, সকল যাত্রীর নাগরিক তথ্য সুরক্ষিত থাকবে। একটি নতুন জিনিস বাস্তবায়ন করতে গেলে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে, কিন্তু থেমে গেলে হবে না।
এসময় কেউ কেউ নতুন উদ্যোগের প্রশংসা করেন, আবার কেউ কেউ নেটওয়ার্ক না পাওয়া ও সার্ভার জটিলতার কথা মন্ত্রীকে জানান। কেউ কেউ অভিযোগ করেন রেলের সেবা ও কর্মীদের যাত্রীদের সাথে আচরণ নিয়ে।