জগন্নাথপুরে এক প্রকল্পের বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ, অরক্ষিত হাওর
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ মার্চ ২০২৩, ৮:৪৬:২৫ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পাউবো ও পিআইসির দর কষাকষিতে এক প্রকল্পের ঝুঁকিপূর্ণ বিশাল আয়তনের ভাঙনে বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে স্থানীয় হাওরের বোরো ফসল। এ নিয়ে কৃষক-জনতার দুশ্চিন্তার শেষ নেই।
জানা গেছে, বিগত ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় মানুষের বাড়ি ঘরের সাথে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এরই অংশ হিসেবে জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের শিবগঞ্জ-রাণীগঞ্জ প্রধান রাস্তার কুবাজপুর ও আছিমপুর গ্রামের মধ্যস্থানে রাস্তা ভেঙে বিশাল ভাঙনে পরিণত হয়। এতে এ রাস্তা দিয়ে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধসহ স্থানীয় কুবাজপুর গ্রামের হাওরের আগাম বোরো ফসল হুমকির মুখে পড়ে যায়।
তাই হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এ বিশাল ভাঙনের পাশ দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৩৩নং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ পান স্থানীয় ইউপি সদস্য আতাউর রহমান মিলাদ। প্রথম দিকে এখানে কোন কাজই করা হয়নি। যে সময় অন্যান্য প্রকল্পের কাজ শেষ, তখন এখানে কাজ শুরু হয়।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে এখানে কাজ শুরু হলেও মাত্র ২ দিনের মাথায় তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় এখানে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে স্বস্তি দেখা দিলেও কাজ বন্ধ হওয়ায় আবারো অস্বস্তি বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ৩৩নং প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানে মাটিকাটার কোন গাড়ি বা শ্রমিকদের পাওয়া যায়নি। এ সময় স্থানীয় কুবাজপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, কয়েক দিন আগে এখানে মাটিকাটা শুরু হলেও হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। কি কারণে কাজ বন্ধ হলো আমরা জানি না। তবে আমরা গ্রামবাসীর একটাই দাবি, বিশাল ডহরের পাশে (ভাঙন) দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করা হোক। তা না হলে আমাদের জমির ফসল অকাল বন্যায় তলিয়ে যাবে। বর্তমানে বাঁধ না থাকায় হাওরটি অরক্ষিত আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩৩নং পিআইসি কমিটির সভাপতি রাণীগঞ্জ ইউপি সদস্য আতাউর রহমান মিলাদ জানান, কোন প্রকার কার্যাদেশ না পেয়েই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এখানে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। ২ দিন কাজ করে বন্ধ করে দিয়েছি। কাজ বন্ধের কারণ হিসেবে তিনি জানান, এখানে কাজের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। মাটি অনুপাতে বরাদ্দ বাড়ালে অবশ্যই কাজ করবো। এ বিষয়ে রাণীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ছদরুল ইসলাম জানান, এখানে কাজের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী (এসও) মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, ৩৩নং প্রকল্পের কাজ অনুযায়ী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে কাজ করা নিয়ে পিআইসি কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আতাউর রহমান মিলাদের সাথে কথা বলবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাওর অরক্ষিত থাকবে না, এখানে অবশ্যই বাঁধ নির্মাণ হবে। প্রয়োজনে একজন কাজ না করলে অন্যজন করবে।