হাড় ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে কিডনি খোয়ালেন দিনমজুর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ মার্চ ২০২৩, ৮:২৩:২৮ অপরাহ্ন
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কনুইয়ের হাড় ভাঙার চিকিৎসা নিতে গিয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক ব্যক্তির কিডনি অপসারণ করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী দিনমজুরী খছরু মিয়া। আদালতের বিচারক আবদুল মোমেন আবেদনটি আমলে নিয়ে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বিবাদী হিসেবে কারও নাম উল্লেখ না করলেও গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা সহকারী রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন খছরু মিয়ার আইনজীবী আমিনুল হক খান।
শুক্রবার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, আদালত থেকে এমন কোনো অভিযোগের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এখনো পাননি। নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, খছরু মিয়া পেশায় দিনমজুর। কাজ করতে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে বাঁ হাতের কনুইয়ের হাড় ভেঙে যায়। এরপর গত বছরের ১৮ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ১৭ নভেম্বর সকালে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে তার বাঁ হাতের অস্ত্রোপচার শেষে বাঁ দিকের কিডনি বের করে নেন। অস্ত্রোপচার শেষে খছরু মিয়ার জ্ঞান ফিরলে তিনি বাঁ হাতের পাশাপাশি বাঁ দিকের কিডনির পাশে অস্ত্রোপচারের চিহ্ন দেখতে পান। এ সময় খছরু মিয়ার স্বজনেরা বিষয়টি জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা কোনো সদুত্তর না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেন। পরে হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিসহ চিকিৎসকেরা জানান, কিডনি থেকে একটি শিরা নিয়ে বাঁ হাতে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরে তড়িঘড়ি করে অস্ত্রোপচারের একদিন পর হাসপাতাল থেকে তার ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফেরার পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন খছরু মিয়া। ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছিলেন না। প্রশ্রাব ও মলত্যাগে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। অসুস্থতার ব্যাপারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে বিস্তারিত জানালে তারা চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করতেন। পরে ১৫ জানুয়ারি জৈন্তাপুর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হন, তার বাঁ দিকের কিডনি নেই। আর্থিক সুবিধার জন্য চিকিৎসকেরা তার কিডনি অপসারণ করে নিতে পারেন বলে খছরু মিয়া অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন বেশি দিন হয়নি। আদালতের এমন কোনো নির্দেশনা বা অভিযোগের ব্যাপারে তিনি অবগত নন। এরপরও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে জানান।