মেয়াদ শেষ হলেও পূরণ হয়নি আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মার্চ ২০২৩, ৭:০৯:২৩ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার আমন সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সরকার এবার জগন্নাথপুর উপজেলা থেকে ৫৯৯ মেট্রিকটন আমন ধান সংগ্রহ করতে চাইলেও করেছে মাত্র ৭ টন। জগন্নাথপুরে এবার বাম্পার বোরোর ফলন হয়েছে। সেই অনুপাতে সরকারি সংগ্রহ একেবারেই নগন্য।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর জগন্নাথপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন সংগ্রহ উদ্বোধন করা হয়। সংগ্রহের মেয়াদ শেষ হয় চলতি ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। পরে আবার বর্ধিত করা হয় আরো এক সপ্তাহ। সর্বশেষ ৭ মার্চ বর্ধিত সময় শেষ হলেও কাঙ্খিত আমন সংগ্রহ হয়নি। জগন্নাথপুর সদর খাদ্য গুদামের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৬২ টন। এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৭ টন। রাণীগঞ্জ খাদ্য গুদামের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৭ টন। এর মধ্যে একেবারেই সংগ্রহ হয়নি।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক সূত্রধর জানান, আমি নতুন এসেছি। আমনের লক্ষ্যমাত্রা পুরণে আমাদের চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। তবুও সম্ভব হয়নি। রাণীগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, অনেক চেষ্টা করেও আমন সংগ্রহ করা যায়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকরা আমাদের কাছে ধান বিক্রি করেননি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ১১২০ টাকা মণ দরে ধান কিনেছে। যা বাজারে অনেক বেশি। ছোট ধান প্রতি মণ ১৪০০ টাকা ও বড়ধান ১২ থেকে ১৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে প্রান্তিক কৃষকেরা বাজারের তুলনায় কমদামে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে চাননি। একে তো দাম কম। তার উপর সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে গেলে ধান বারবার শুকালেও তাদের চাহিদা অনুযায়ী শুকনো হয় না। ধান গুদামে নিয়েও ফেরত নিয়ে আসতে হয়। কৃষিকার্ড, কৃষিতালিকা, ব্যাংক একাউন্টসহ নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। আর বাজারে ধান বিক্রি করলে এসবের কিছুই লাগে না। যে কারণে দুরদুরান্তের একেবারেই প্রান্তিক কৃষকেরা সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তাছাড়া এবার দেশের বেশ কয়েকটি কোম্পানী সরাসরি জমি থেকে কৃষকদের মাড়াই করা ধান উচ্চমূল্যে কিনেছেন। এর প্রভাবও পড়েছে সরকারের ধান সংগ্রহ কার্যক্রমে। তাই আগামী বোরো মৌসুমে সরকারি ভাবে স্থানীয় বাজার দরের সাথে সংগতি রেখে ধানের দাম নির্ধারণ করতে হবে। তা না হলে আমনের মতো বোরো সংগ্রহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।