চট্রগ্রামে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড দুর্ঘটনা ১৯ বছরে ২৫১ শ্রমিক নিহত
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মার্চ ২০২৩, ৯:৩৭:৪৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড দুর্ঘটনায় ২০০৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৯ বছরে মোট ২৫১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এ পর্যন্ত শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় ২ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্মের ১৯ বছরের তথ্য ও চলতি বছরের এ পর্যন্ত ২ জনসহ মোট ২৫১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড শিল্পাঞ্চল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। তবে সীতাকুন্ড শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের দুর্ঘটনা নতুন কোনো ঘটনা নয়। কয়েক দশক ধরে ইয়ার্ডগুলোতে অসংখ্য দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত অনেক শ্রমিককে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও অধিকার কর্মীদের মতে, শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রতি মালিকদের ‘নিছক গাফিলতির’ কারণে এসব ইয়ার্ডে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
শিপব্রেকিং ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী জাহাজ ভাঙার জন্য তীরে আনার আগে মালিকদের অবশ্যই বিষাক্ত উপাদান অপসারণ করতে হবে। কিন্তু, শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের অধিকাংশ মালিক সঠিকভাবে বিষাক্ত উপাদান অপসারণ করেন না। মালিকরা শ্রমিকদের জাহাজ ভাঙতে বাধ্য করেন। কিন্তু, জাহাজে বিষাক্ত উপাদান থাকায় ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী শ্রমিকদের জাহাজ ভাঙার কাজে নিয়োজিত করার আগে অবশ্যই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কিন্তু, বেশিরভাগ মালিক তা করেন না। এর পরিবর্তে তারা সঠিক প্রশিক্ষণ না দিয়ে অপ্রশিক্ষিতদের জাহাজ ভাঙার কাজে নিয়োজিত করেন। ফলে, দুর্ঘটনা ঘটে
শিপব্রেকিং ওয়ার্কার্স ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সদস্য ফজলুল কবির মিন্টুর মতে, শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয় না। ফলে, শ্রমিকরা বেশি দুর্ঘটনা ঝুঁকিতে থাকেন। এ কারণে কারণে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার এত বেশি।
তিনি বলেন, ‘শিপব্রেকিং শ্রমিকরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। শ্রম আইন অনুযায়ী, একজন শ্রমিককে প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর আধা ঘণ্টা বিশ্রাম দিতে হবে। যেন তিনি কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু, এই নিয়ম মানা হয় না। এর পরিবর্তে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে শ্রমিকরা আট থেকে ১০ ঘণ্টা ডিউটি করতে বাধ্য হন। যা তাদের একাগ্রতাকে ব্যাহত করে।