দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০২৩, ৯:৪৪:৫৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ না করার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কার সঙ্গে সংলাপ করবেন, সে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংলাপ করেছিলেন। কিন্তু তার ফল নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই হয়নি।সোমবার বিকেলে গণভবনে কাতার সফর বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এজেন্সি উন্মুখ হয়ে আছে। ৪০ জনের নামে (ওয়াশিংটন পোস্টের বিজ্ঞাপন) যেটা এসেছে, ওটার পেছনেও কিছু অ্যামভিশন আছে। এতে কোনও সন্দেহ নেই। যাদের ইচ্ছা, তারা জনগণের কাছে যাবে। নির্বাচন যাতে অবাধ-সুষ্ঠু হয়, তার জন্য নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সংশোধনী বা সংস্কার আনা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয় তা প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে; এটা তো আমাদেরই স্লোগান। আমাদের যে আন্দোলন তা আগাগোড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। জনগণের ভাতের অধিকার ও ভোটের অধিকারের আন্দোলনও আমাদের করা। সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।
গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, স্থিতিশীলতার জন্য অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার।সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার ব্যাপারে অনেকের কাছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে। অনেক সময় এই সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করে না। যেহেতু করোনা দেখা দিল, তখন একটু দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনেকের ছিল যে এটা এখনই গ্রহণ করা সম্ভব কি না। আমি কিন্তু বলেছি, আমরা পারব। যে কারণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটা অনুমোদিত হয়ে গেছে। কাজেই আমরা সেই সুযোগ নিয়েছি।
এখন দেশ এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটছে। ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিরও চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এটাকে কিছু করতে পারব। হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেটা মোকাবিলা করবে আমাদের জনগণ।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, কাতার সফরকালে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস প্রদান করেছেন।
দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইংল্যান্ড বিদ্যুতের দাম দেড়শ’ শতাংশ বাড়িয়েছে। আমরা সেটা করিনি। আমরা বিদ্যুৎ কিনে আনি, ভর্তুকি দিই। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে তাই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিনিয়ত সমালোচনা শুনেই যাচ্ছি। আমরাই সুযোগ করে দিয়েছি। এর আগে তো এতো টেলিভিশন ছিল না, এতো রেডিও ছিল না। আমরাই সব উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ। দেশ বিদেশ থেকে বসে বসেও আমাদের সমালোচনা করে। আমাদের করে দেওয়া জিনিস দিয়ে আমাদের সমালোচনা করে। এরপরও শুনতে হয়- কিছুই করি নাই।
তিনি বলেন, আমি ১৯৯৬ সালে আমার সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কৃষি গবেষণা উৎসাহিত করা, ২০০৯ সাল থেকে দেশব্যাপী মজবুত ও নিরাপদ ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, জৈব প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা, বৃত্তি, অনুদান প্রচলনসহ নানাবিধ উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছি।