ঢাকায় ভাঙ্গছে ৪২টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০২৩, ৯:৪৭:৫৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: ভূমিকম্প সহনশীলতা প্রকল্পের আওতায় ঢাকায় যে ৪২টি ভবনকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে হবে। ভেঙে ফেলতে হবে ৩ মাসের মধ্যে। কিন্তু ভূমিকম্পের ডেঞ্জার জোন সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কি অবস্থা তা আর জানা যায়নি। এ নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
দুর্যোগ মোকাবিলায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে সরকারি ও স্বায়ত্বশায়িত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ভূমিকম্প সহনশীলতা প্রকল্প (আরবান রেজিলিয়েন্স) এর আওতায় ২ হাজার ৭০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২০৭টি হাসপাতাল, ৩৬টি থানা ও ৩০৪টি অন্যান্য ভবনের জরিপ চালানো হয়। এসব ভবনের মধ্যে ৫৭৯টির ‘প্রিলিমিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ (পিইএ) করা হয়। এতে ৪২টি ভবন অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়।
মালিকরা নিজ উদ্যোগে এই ভবন আগামী তিন মাসের মধ্যে না ভাঙলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এসব ভবন ভেঙে দেবে। সেক্ষেত্রে মালিকপক্ষের কাছ থেকে খরচ আদায় করা হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ১৮৭টি ভবনকে ‘ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট’ করে সেগুলো মজবুত (রেক্টিফাই) করতে প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হবে। নগর উন্নয়ন কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন ভবনে বিস্ফোরণে প্রাণহানি এবং সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার পর ভবনের নিরাপত্তার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।নগর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন, এসব ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। এ কারণে আমরা বলেছি সাত দিনের মধ্যে ভবন থেকে সবকিছু সরিয়ে নেওয়ার জন্য। এরপর তিন মাসের মধ্যে এসব ভবন ভাঙতে হবে।
এদিকে, দেশে ভূমিকম্পের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল সিলেট। একাধিক চ্যুতি সক্রিয় থাকায় সিলেটকে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোন’ বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। গত দুই বছরে সিলেটে অন্তত ১৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবেলায় সিলেটে নেই কার্যকর উদ্যোগ।
২০২১ ও ২২ সালে কয়েকদফা ভূমিকম্পের পর ঝুঁকি মোকাবেলায় কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।
বড় ভূমিকম্পে ক্ষতি কমিয়ে আনতে নগরের সব বহুতল ভবনের ভূমিকম্প সহনীয়তা পরীক্ষা ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা । এরপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে নগরের বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার এলাকার কিছু ভবন পরীক্ষা করানো হয়।
বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষার পর ২০২১ সালের ৩০ মে নগরের ২৫ টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রকাশ করে সিসিক।এরমাঝে সিলেটের ৬টি বিপণিবিতান বন্ধ করে দিয়েছিল সিলেট সিটি করপোরেশন। এগুলো ভেঙে ফেলা হবে বলেও সেসময় জানিয়েছিল সিসিক। তবে ভেঙে তো ফেলা হয়নিই, উল্টো কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের খুলেছে ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিবিতানগুলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে সংগঠিত ভূমিকম্পের অন্তত ২০টির উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের ভেতরে। যার মধ্যে ১১টি হচ্ছে সিলেট অঞ্চলে। বাকি ৭টি ছিল সীমান্ত এলাকাসহ আশপাশের দেশগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা জানান, বারবার ভূমিকম্প হওয়ার অর্থ এখানকার চ্যুতির লাইনগুলো সক্রিয় আছে।