আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস আজ : সংকটাপন্ন সিলেটের অসংখ্য নদী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:৩০:১৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
আজ ১৪ মার্চ, আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশের নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করা হবে দিবসটি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নদীর অধিকার’।
১৯৯৭ সালের ব্রাজিলে কুরিতিবা শহরে এক সমাবেশ থেকে নদীর প্রতি দায়দ্ধতা মনে করিয়ে দিতে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে এক হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। তাইওয়ান, ব্রাজিল, চিলি, আর্জেন্টিনা, থাইল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওই সম্মেলনে অংশ নেন প্রতিনিধিরা। ওই সম্মেলন থেকেই ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বর্তমানে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেট বিভাগের অর্ধশতাধিক নদ-নদী সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। উৎসমুখসহ বিভিন্ন স্থানে এসব নদ-নদী ভরাট হয়ে গেছে। এতে ভাটির জনপদে নৌপথ বন্ধ, চাষবাসে সংকট, অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নদী হারাচ্ছে তার বৈশিষ্ট্য, অন্যদিকে দূষণের মাত্রাও বাড়ছে। বিশেষ করে পানিতে বর্জ্য মিশ্রণের ফলে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ভাটির জনপদের নদীগুলো। তীরবর্তী জনপদের জীবন-জীবিকা বদলে যাচ্ছে। বিলীন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। হ্রাস পাচ্ছে মাছের উৎপাদন। বিভিন্ন স্থানে গতিপথ পরিবর্তন, নাব্য হারিয়ে নদীভাঙন ব্যাপক হচ্ছে।
সিলেট বিভাগের প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা, খোয়াই, মনু, ধলাই, পিয়াইন, সারি, সুতাং, রতœা, সোনাই, করাঙ্গী, ঝিংড়ি, ভেড়ামোহনা, রক্তি, কালনী, বৌলাইসহ বেশকিছু নদ-নদীর নাব্য হারিয়ে গেছে। নদী ভরাটের কারণে বোরো চাষীরা হাহাকার করেন এই মৌসুমে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সুরমা ও কুশিয়ারা এখন যৌবনহারা। ভাঙনের কবলে বদলে গেছে সিলেটের কয়েকটি অঞ্চলের মানচিত্র। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা ও কুশিয়ারাসহ ৩০টি ছোট-বড় নদী এবং মৌলভীবাজারের মনু, ধলাই এবং হবিগঞ্জের খোয়াইসহ ২৩টি নদ-নদীই বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
এই নদীগুলো বাঁচানোর আকুতি দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা।
যদিও সম্প্রতি সিলেটে সুরমার ১৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু হয়েছে। তবে তা একেবারেই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচী পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
নদী কৃত্য দিবস উপলক্ষে সুতাংসহ হবিগঞ্জ অঞ্চলের সব নদ-নদী দখল-দূষণমুক্ত রাখার দাবিতে ছবি এঁকে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাপা।
সমাবেশে বলা হয়, খোয়াই, সুতাংসহ হবিগঞ্জের নদীগুলো চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় পতিত হয়েছে। দখল-দূষণসহ নানাবিদ অত্যাচারে নদীগুলো বর্তমানে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। একটি জাতির সভ্যতা ও অস্তিত্বের অংশ নদী যদি না বাঁচে, তাহলে আমাদের সভ্যতা-অস্তিত্ব কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?’