ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি, ১৭ বাংলাদেশি উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মার্চ ২০২৩, ৯:০৫:২৩ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট:
অবৈধপথে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টাকালে কত প্রাণ ঝরেছে। কত স্বপ্নের সমাধি হয়েছে সাগর থেকে মহাসাগরে। তবু থামছেনা অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা। এবার ইউরোপের দেশ ইতালি প্রবেশকালে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৭ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। লিবিয়া থেকে অবৈধপথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে তাঁরা ইতালি যাচ্ছিলেন। তাদের উদ্ধার করে উপকূলে নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
ইতালির কোস্টগার্ডের ভাষ্য, লিবিয়া থেকে ৩০ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা নৌকাটি গত রোববার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে এবং উল্টে যায়।
ইতালির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এএনএসএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধার হওয়া ১৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের সিসিলির শহর পোজালোতে রাখা হয়েছে। তবে নৌকায় থাকা বাকী ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
অভিবাসীবাহী কোনো নৌকা বিপদে পড়লে দাতব্য সংস্থা অ্যালার্ম ফোনের কাছে সংকেত পাঠিয়ে থাকে। অ্যালার্ম ফোনের দাবি, গত শনিবার নৌকাটি বিপদে পড়েছে বলে জানানোর পরও ইতালি কর্তৃপক্ষ সময়মতো সেখানে তাদের কোস্টগার্ডকে পাঠায়নি। গত রোববার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্পষ্টত, ইতালি কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছিল যে ওই মানুষদের ইতালিতে না নিতে হয়। এজন্য তারা দেরি করছিল। তারা চাইছিল লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ যেন ঘটনাস্থলে যায় এবং ওই মানুষদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
ইতালির কোস্টগার্ড বলেছে, নৌকাটি যেখানে ডুবেছে, তা তাদের আওতাভুক্ত এলাকা নয়। তবে ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, নৌকাটি ডুবে যাওয়া ঠেকাতে সাধ্যমতো ব্যবস্থা নিয়েছে রোম।
দাতব্য সংস্থা মেডিটারেনিয়া সেভিং হিউম্যানস বলছে, লিবিয়ার বেনগাজি বন্দর থেকে প্রায় ১১০ মাইল উত্তর-পশ্চিমের সাগর এলাকায় নৌকাটি উল্টে গিয়েছিল।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছেন। ২০২২ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ৬ হাজার ১৫০ জন ছিল। অর্থাৎ, ইতালিতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা তিনগুণের বেশি বেড়েছে। শুধু গত ৯ থেকে ১১ মার্চের মধ্যে ইতালিতে পৌঁছেছেন সাড়ে চার হাজারের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের গবেষণা অনুসারে, ইউরোপে গমনকারী বাংলাদেশিদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এই যে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথে লিবিয়ায় বন্দিদশা, শারীরিক নির্যাতন, ছোট নৌকা বা ট্রলারে চেপে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে সলিল সমাধির আশঙ্কা ও ভীতি তাদের নিবৃত্ত করতে পারে না। তাদের পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কেউ যদি ওইভাবে ইউরোপে গিয়ে থাকে, তবে তাকেই তারা জীবনের মোড় ঘুরানোর ‘আইডল’ হিসাবে বেছে নিচ্ছে।
ভূমধ্যসাগর দিয়ে যত মানুষ ইউরোপে প্রবেশ করার চেষ্টা করে সেই তালিকার শীর্ষ দশে আছে বাংলাদেশ। বিবিসির তথ্যমতে, প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি এভাবে ইউরোপ ও অন্যান্য উন্নত দেশে যাওয়ার চেষ্টা করে।