সিলেটে কালবৈশাখী-শিলাবৃষ্টি : ফল-ফসলের ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মার্চ ২০২৩, ৩:৩১:১৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ফাগুনের শেষ বেলায় সিলেটে আঘাত হানলো কালবৈশাখী। বুধবার ভোর রাতে প্রচন্ড শক্তির এ কালবৈশাখীর সাথে ছিলো শিলাবৃষ্টিও। শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো, নানা ধরণের সবজি, লিচু ও আম মুকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালবৈশাখিতে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাাকায় ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্তও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার দিন থেকেই সিলেটে প্রচন্ড বাতাস বয়ে যায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই আকাশ হয়ে যায় মেঘলা। রাত যত গভীর হয়, বাতাসের তীব্রতা বাড়ে। চারদিক অন্ধকার করে মেঘ জমে। শুনা যায় আকাশে গর্জন। ভোর ৪টার দিকেই শুরু হয় ঝড়-তুফান, বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি। বড় আকারের শিলা পড়ে বিভিন্ন স্থানে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সিলেটে সর্বোচ্চ ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
ঝড়-তুফানে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের তাঁর ছিঁড়ে যায়। উপড়ে যায় বিদ্যুতের খুঁটি। এতে বিদ্যুৎহীন ভোগান্তিতে পড়েন নগরের বাসিন্দারা। এছাড়া নগরে ব্যানার, পোস্টার উড়ে যায়। বিলবোর্ড উপড়ে যায়। তবে এই বৃষ্টি ধুলায় ধূসর নগরে একটু স্বস্তি এনে দিয়েছে।
এদিকে আমাদের বিভিন্ন উপজেলা প্রতিনিধি জানান, বৃষ্টির সাথে শিলা পড়ে বসতঘর, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে বাড়ি-ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে অনেক এলাকায়। বোরো ফসলের ক্ষতি ছাড়াও লিচু ও আমের মুকুল ঝরে গেছে। ক্ষতি হয়েছে শাকসবজিরও।
বিয়ানীবাজারের এক কৃষক জানান, বৃষ্টিটা বোরো ফসলের জন্য ভালই হতো। কিন্তু শিলা বৃষ্টি হওয়ার ধান গাছের গজানো শীষ নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এলাকার বেশিরভাগ বোরো ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু বিয়ানীবাজারের এই কৃষকই নন, বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরাও একই কথা বলেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, সিলেটে ঝরবৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিলেটের মেঘ কমে আসে। এই মেঘ জড়ো হয় দক্ষিণাঞ্চলের দিকে। তিনি বলেন, এখন প্রাক্ মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সময়। এ সময় মেঘ ও বৃষ্টি হবে, তা স্বাভাবিক। আর কালবৈশাখীর মেঘ সাধারণত গঠন হয় দুপুরের পর থেকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় আরো কালবৈশাখীর আশঙ্কা আছে। ২২ মার্চ পর্যন্ত এই প্রবণতা থাকবে।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, বুধবার শেষ রাত ৪টা ১০ মিনিট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। থেমে থেমে চলে ৬টা পর্যন্ত। এ সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ রেকর্ড করা হয়েছে প্রায় ২২ মিলিমিটার।