‘তিনজন ছাড়া কেউ ভালো নেই’
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ মার্চ ২০২৩, ৮:৩৯:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা। ভোলাগঞ্জ থেকে সিলেটের দিকে বাসে উঠলেন শুভ্র দাড়ির এক বৃদ্ধ। গায়ে ছিল ফতুয়া আর লুঙ্গি, মাথায় টুপি। সামনের দিকের সিটে বসলেন। ওপাশের সিট পেয়ে গেলেন এলাকার পরিচিত দুজন। নিভৃত পল্লীর তিনজনের আলোচনা মুহূর্তে টেলিভিশনের কোনো টক শো’র মতো রূপ নিলো। পরে যোগ দেন আরও কয়েকজন। তাদের কথায় উঠে এলো এলাকার নানান সমস্যা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দেশের সামগ্রিক অবস্থা। বয়োবৃদ্ধ লোকটি ভোলাগঞ্জ থেকে মাঝপথে গন্তব্য বহরের ঘাটা পয়েন্টে নেমে গিয়েছিলেন। মাত্র মিনিট পচিশেক সময়ের এই যাত্রায় বলে গেলেন অনেক কথা। প্রত্যন্ত জনপদের একজন বৃদ্ধকেও এখন দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবায় এটা তাকে দেখেই বুঝা গেল। তার কথায় ছিল, নিষ্পেষণ, হতাশা আর অবজ্ঞার সুর। দীর্ঘ জীবনের পথ পাড়ি দিয়ে উত্তর প্রজন্মের জন্য হাপিত্যেশ ছিল তার নিঃশ^াসে। এক সময় যে লোকগুলো আড্ডায় নানান খোশগল্প আর কিচ্ছা কাহিনিতে মশগুল থাকতেন তারা এখন দেশ নিয়ে চিন্তিত।
তার কথার মধ্যে একটি মন্তব্য বেশ দাগ কাটে। পাশের প্রায় সবাই ছিলেন স্থানীয় গ্রামীণ লোকজন। তারা যখন জীবন জীবিকা, পাথর কোয়ারি নিয়ে কথা বলছিলেন, তিনি তখন তাদের এ কথাটি বলেন। নাম না জানা এই বৃদ্ধ বলেন এখন তিনজন (শ্রেণি) লোকই ভালো আছে। তাদের কোনো চিন্তা নেই। এই তিনজন (শ্রেণি) হলেন মুক্তিযোদ্ধা, তারা প্রতিমাসে ভাতা পান। আরেক শ্রেণি প্রশাসন এবং অন্যরা সরকারি চাকুরে। তাদের এখন কোনো চিন্তা নেই। বাকি সবাইকে সকালে ঘুম ভাঙবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করতে হয়। ঘুম ভাঙলেও আগেরদিনে রোজগারে আজ চলতে পারবেন কিনা তা ভাবতে হয়, কেননা প্রতিদিনই জিনিসের দাম বাড়ছে। প্রতিদিনই কাজ কমছে। এই অবস্থায় এই তিনশ্রেণি ছাড়া বাকি কেউই ভালো নেই।