জামালগঞ্জের তেলিয়া গ্রাম: ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটে বসতিদের
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মার্চ ২০২৩, ৯:০২:৩৮ অপরাহ্ন
তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, জামালগঞ্জ: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের তেলিয়া গ্রামে সুরমা নদীর ভাঙ্গনে অনেক পরিবার আজ বাস্তুহারা হয়ে পথে বসেছেন। বাপ-দাদার ভিটে বাড়িও ছেড়ে শতাধিক পরিবার অন্যত্র চলে গেছেন। এখনো ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন এখানকার বসতিরা। বেশ কয়েক বছর ধরে ভাঙ্গনের কারণে বিলীন হয়েছে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি।কেউ কেউ বাপ-দাদার ভিট-মাটি হারিয়ে অন্য বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছেন। বেশ কয়েক বছর পূর্বে ভাঙ্গন রোধে সরকারী প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ও ব্লক দিয়ে ভাঙন রোধের কাজ করার পর কিছুটা ভাঙ্গন রোধ হলেও গ্রামের দক্ষিণ-পূর্বাংশে তেলিয়া-শাহাপুর বাঁধ পর্যন্ত এখনো ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, জামালগঞ্জে সুরমা নদীর তীরবর্তী গ্রাম- তেলিয়া, কামলাবাজ, নয়াহালট, লক্ষ্মীপুর, লালপুর-ওপারে গোলকপুর, বৌলাইগঞ্জ বাজার, রামপুর, আমানীপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় প্রতি বছরেই থেমে থেমে নদী ভাঙ্গনে ভাঙ্গছে বসতবাড়ি ফসলী জমি। সম্প্রতি নদীগর্ভে চলে গেছে গড়ে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা। স্থনীয় বাসিন্দারা জানান এতে কমপক্ষে ১০০ টির বেশি ঘর নিমজ্জিত হয়েছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গনের কারণে কেউ কেউ কিছু দিন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তেলিয়া গ্রামে সুরমা নদীর করালগ্রাসে ভয়াবহ ভাঙন চলছে। অনেকেই বাড়ি-ঘর হারিয়ে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কোন রকম টিকে আছেন। যদি ভাঙ্গন রোধ সরকারের কোন সদয় দৃষ্টি হয়ে যায় এই আশায়।স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান জানান, নদী ভাঙ্গনের কারণে তেলিয়া গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এখন তেলিয়া গ্রাম ও শাহাপুর বাঁধ বাজারের থেমে থেমে ভাঙ্গছে।স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভাঙ্গনের কারণে বহু পরিবার অন্যের বাড়িতে আশ্রিত অবস্থায় আছেন। আমার নিজের বাপ-দাদার ভিটে বাড়িও নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (জামালগঞ্জ-১ শাখা) জাহিদুল ইসলাম জনি বলেন, তেলিয়া গ্রামের ভাঙ্গন থেকে শাহাপুর বাঁধ বাজার পর্যন্ত পাঁচশত মিটার দৈর্ঘ্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছ। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে নদী ভাঙ্গন রোধে এই প্রকল্পটি ফেব্রুয়ারিতেই (২০২৪) পাস হওয়ার কথা। প্রকল্পটি পাশ হলেই নীতিমালা অনুয়ায়ী কাজ শুরুর আশা করা যায়।