হাওরপাড়ে ১৮ বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১১:৩৮:০৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : সুনামগঞ্জের হাওরপাড়ে কৃষকদের বজ্রপাত থেকে রক্ষায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় হাওড়ে স্থাপন করা হয়েছে ১৮টি লাইটেনিং এরেস্টার টাওয়ার ‘বজ্রনিরোধক দণ্ড’। এতে হাওড়ে কৃষক, জেলে ও এমনকি গবাদিপশু বজ্রপাত থেকে সুরক্ষা পাবে বলে জানিয়েনে সংশ্লিষ্টরা। পর্যায়ক্রমে সুনামগঞ্জের সব জায়গায় তুরস্কের তৈরি এসব বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানিক মিয়া জানান, সুনামগঞ্জের খরচার হাওড় ও দেখার হাওড়ের উন্মুক্ত প্রান্তরে ৪০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট লাইটেনিং এরেস্টার টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি টাওয়ার ১০৭ মিটার রেডিয়াসে থাকা লোকজন পশুপাখি গাছপালা গবাদিপশুকে বজ্রপাতে মৃত্যু থেকে রক্ষা করবে। তুরস্কের তৈরি প্রতিটি ডিভাইসে রয়েছে কপারচিপ, জাঙ্কশন বক্স, ডিজিটাল কাউন্টার ডিভাইস, কপার রডসহ নানা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস। প্রতিটি টাওয়ার মাত্র ৬০ মাইক্রোসেন্ড সময়ের মধ্যে আকাশে হওয়া বজ্রপাতকে মাটিতে টেনে নিয়ে আসবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছর সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা শাল্লা উপজেলার হাওড় এলাকায় ১৮টি লাইটেনিং এরেস্টার টাওয়ার স্থাপন করেছে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। প্রতি বছর মার্চ থেকে জুলাই মাসে হাওড় এলাকায় বজ্রপাতে বিপুলসংখ্যক কৃষক শ্রমিক জেলের হতাহতের ঘটনা ঘটে। বজ্রপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গবাদিপশু গাছপালা। কৃষকরা ক্ষেতখামারে কাজ করতে পারেন না। জেলেরা হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে পড়েন বিপাকে। গৃহিণীরাও বাড়ির আঙিনায় কাজকর্ম করতে পারেন না।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর এলাকার একাধিক কৃষক জানান, যে এলাকায় বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে সেখানেই কাজ করা হবে। এতে হাওরে কর্মরত কৃষক জেলেরা বজ্রমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তারা আরও বেশি পরিমাণ বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আবদুর রকিব বলেন, হাওড় এলাকা জলাশয় ও মেঘালয় পাহাড়বেষ্টিত হওয়ায় বজ্রপাত বেশি হয়।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, আগামীতে আরও বেশি বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি দণ্ড স্থাপনে ৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ বছরের মার্চে জামালগঞ্জের হাওড়ে কৃষিকাজ করার সময় বজ্রপাতে এক কৃষক প্রথম মারা গেছেন।