বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হবে : আমির খছরু
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ মার্চ ২০২৩, ৯:১৩:২৫ অপরাহ্ন
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনীতিতে পেশাজীবিদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাজীবিদের মাধ্যমে রাজনীতিবীদদের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি হয়। বাংলাদেশের ৬৫ ভাগ ভোটার তরুণ। এই তরুণদের মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। দেশ আজ যে গর্তের মধ্যে পড়েছে তা থেকে উত্তোলনের জন্যই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। আজ রাষ্ট্রে মানবাধিকার নাই, ভোটাধিকার নাই, কথা বলার স্বাধীনতা নাই, জীবনের নিরাপত্তা নাই। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য সংবিধানকে দলীয় দলিলে পরিণত করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় হওয়ার পর দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। তখন নতুন সরকারকে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রকাঠামোকে মেরামত করা অপরিহার্য। এই ফ্যাসিস্ট বিদায়ের পরে বিএনপি কোন নীতিতে দেশ পরিচালনা করবে, এমন বিষয়কে সামনে রেখেই দীর্ঘ গবেষণার পর রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের এই রুপরেখা তৈরি করা হয়েছে। সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে পারলে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠা করা হবে। উচ্চ কক্ষ ও নিম্ন কক্ষ থাকবে।
মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট জেলা বিএনপির উদ্যোগে নগরীর দরগাহ গেইটস্থ একটি হোটেলে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রুপরেখা’ শীর্ষক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সংসদ বহাল রেখে জাতীয় নির্বাচন করলে নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতেই থাকবে। এই পদ্ধতিতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের তিন মাস পূর্বে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া অপরিহার্য। কিন্তু সংবিধান থেকে এটিকে বাদ দেয়া হয়েছে। জনবান্ধব সংবিধান প্রণয়ন করতে হলে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি বলেন, যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তা জনগনের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই এটিকে সরকার বলা যায় না। সরকার হলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত। আওয়ামীলীগ ক্ষমতা দখল করে আমাদের শত শত নেতাকর্মীদের গুম-খুন করেছে। ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিয়েছে। বিএনপি তার পরেও শান্তিপূর্ণ ভাবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে। কারন বিএনপি দেশে বিশৃঙ্খলা চায় না, বিএনপি শান্তি চায়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। জেলা বিএনপির সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক জাহেদ আহমদের কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সূচিত সভার শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতার জন্য গণতন্ত্র অপরিহার্য। নির্বাচন ব্যবস্থার উপর জনগণের কোন আস্থা নেই। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। বিচার ব্যবস্থাকে বিনষ্ট করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিমকোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে তা লজ্জাজনক। সর্বোপরি রাষ্ট্রকাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। এখননতা মেরামত করা অপরিহার্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পর দেশটাকে মেরামত করার প্রয়োজনীয়তা কেন হল, এটি বুঝতে হবে। প্রায় সমসাময়িক সময়ে আমাদের সাথে আরো বেশ কিছু দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেসব দেশের অবস্থানের তুলনায় আমরা কোন অবস্থানে আছি। আমাদের দেশের এই পরিণতি কেন? গত ১৫ বছরের রাষ্ট্রের যে স্বাভাবিকতা বিলিয়ে দেয়া হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আওয়ামীলীগের বেপরোয়া লুটপাটের কারণে রাষ্ট্রের কাঠামো আজ ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত করা অপরিহার্য। সুতরাং দেশকে বাঁচতে, দেশের মানুষকে বাঁচতে ১০ দফা আন্দোলন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত করে দেশে সুশাসন বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক, প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম, মহানগর লেবার পার্টির সভাপতি মাহবুবুর রহমান খালেদ, সিলেট পেশাজীবি পরিষদের সভাপতি ডা. শামিমুর রহমান, শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রফেসর ড. শাহ আতিকুল হক, প্রফেসর খালেকুর রহমান, সিকৃবির শিক্ষক প্রফেসর ড. মোজাম্মেল হক, সিলেট জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট সাঈদ আহমদ ।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহবায়ক এটিএম ফয়েজ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাও: আব্দুল মালিক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, জেলা বিএনপি নেতা শাহাব উদ্দিন আহমদ, শাহ জামাল নুরুল হুদা, ফখরুল ইসলাম ফারুক, একেএম তারেক কালাম, শহিদ আহমদ চেয়ারম্যান, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, তাজরুল ইসলাম তাজুল, মামুনুর রশিদ মামুন, আনোয়ার হোসেন মানিক, মাহবুবুল হক চৌধুরী, এডভোকেট আবু তাহের, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি, কোহিনুর আহমদ, রফিকুল ইসলাম শাহপরান, সালেহা কবির শেপী, এডভোকেট আল আসলাম মুমিন, আব্দুল হাফিজ, শাকিল মোর্শেদ, শরিফুল হক, আলী আকবর, আলাউদ্দিন রিপন, জালাল খান, আব্দুল মালেক, মাহবুব আলম, অর্জুন ঘোষ, মনিরুল ইসলাম তোরন, শাহীন আলম জয়, ডা. নাজিম উদ্দিন, আসাদ উদ্দিন,এডভোকেট ওবায়দুর রহমান ফাহমী, সুলতানা রহমান দিনা, আলাউদ্দিন আলাই,নাজিম উদ্দিন পান্না, বখতিয়ার আহমদ ইমরান, সুমেল আহমদ চৌধুরী, রায়হান এইচ খান, শামসুর রহমান শামীম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি