নগরজুড়ে যানজট, ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মার্চ ২০২৩, ১২:১০:৩৬ অপরাহ্ন
এ টি এম তুরাব :
রমজান এলেই হুহু করে বাড়ে নিত্যপণ্যের দাম। দেখা দেয় বিদ্যুৎ ও পানির সংকট। যানজটের ভোগান্তি বাড়ে কয়েক গুণ। অন্য বছরের মতো এবারও রমজান শুরু হওয়ার আগেই তীব্র যানজটে নাকাল নগরবাসী। সাধারণত রমজান মাসে নগরীর সড়কগুলোতে মানুষের ব্যস্ততার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হতে দেখা যায়। কিন্তু এবার আগেভাগেই যানজটে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরের বাসিন্দাদের।
এ দিকে আসন্ন মাহে রমজানকে সামনে রেখে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলেও তেমন একটা কাজে আসেনি। প্রতিটি সিগন্যালে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে। এ অবস্থায় যানজট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে পরিবহন মালিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, রিকশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। আর মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি বন্ধ রাখার দায়িত্ব নগর পুলিশের।
অন্যদিকে নগরের কয়েকটি সিএনজি ফিলিং স্টোশনে গ্যাস না থাকায় অনেকেই পরিবহন সংকটে পড়তে হয়েছে। ফলে কেউ কেউ পায়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। প্রতিমাসের শেষের দিকে এই সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি কারণে নগরে যানজট হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রমজান হওয়ায় প্রতিদিন কেনাকাটা করতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে অসংখ্য মানুষ নগরে আসছে, অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, অধিকাংশ সড়কে সংস্কারকাজ চলছে। এছাড়া নগরের অধিকাংশ মার্কেট ও হাসপাতালে পার্কিং ব্যবস্থা না থাকা। তবে নগরবাসীর অভিযোগ, রমজানকে সামনে রেখে নগরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় অবৈধ অটোরিকশার পাশাপাশি নিষিদ্ধঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করাই যানজটের প্রধান কারণ।
বুধবার বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে, সকাল থেকেই নগরে বাড়তে থাকে যানবাহন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় যানজট। কোথাও কোথাও আধ ঘণ্টায় এক কিলোমিটার বেগেও চলেনি গাড়ি। অধিকাংশ সড়ক যানজটে একেবারে নাকাল অবস্থা ছিলো। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে নগরের অধিকাংশ সড়কে যানবাহন চলাচল আটকে যায়। নগরে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা হলেও রোজার শুরু হওয়ার আগেই তা যেন আরো অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
দুপুর ১২টায় নগরের প্রবেশপথ উপশহর পয়েন্ট থেকে সোবহানীঘাট সড়কে দিনভর যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। যানজটের একই চিত্র দেখা গেছে বন্দারবাজার-জিন্দাবাজার-আম্বরখানা সড়কে। নগরীর প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজারকে কেন্দ্র করে আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা দিনের বেশিরভাগ সময় যানজটে স্থবির ছিল। এর বাইরে নাইওয়রপুল থেকে কুমারপাড়া, নাইওয়রপুল হয়ে শিবগঞ্জ-টিলাগড় পর্যন্ত কয়েক প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায়ও সৃষ্টি হয় অস্বাভাবিক যানজটের।
বদরুল ইসলাম নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েকদিন ধরে উপশহর থেকে বন্দরবাজারস্থ অফিসে সময়মতো পৌঁছাতে পারছেন না তিনি। মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করলেও উপশহর পয়েন্ট, কাঁচাবাজার, সোবহানীঘাট এলাকায় তীব্র যানজটের কবলে পড়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। উপশহর থেকে যতরপুর হয়ে গেলে সোবহানীঘাট পয়েন্টে যানজটে পড়তে হচ্ছে। আবার মীরাবাজার হয়ে লিংক রোড ব্যবহার করেও নাইওরপুল পয়েন্টে গিয়ে আটকা পড়তে হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. ছাদেক কাওছার দস্তগীর দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, রমজানকে কেন্দ্র করে জেলা ও উপজেলা থেকে প্রচুরসংখ্যক মানুষ বিভাগীয় শহর সিলেটে কেনাকাটা করতে আসছে। নগরে মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ার কারণেই মূলত যানজট দেখা দিচ্ছে। তবে নগরের অধিকাংশ বিপণিবিতান ও হাসপাতালে পার্কিং সুবিধা না থাকায় মানুষজন রাস্তার মধ্যেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখছে, এতেও যানজট দেখা দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রমজানে সামনে রেখে ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যানজটে যাতে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে না হয় সেজন্য নগরে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাসহ ১২৮জন সদস্যের পাশাপাশি বিশেষ ফোর্স মাঠে থাকবে।