দুয়ারে সিসিক নির্বাচন, দৃষ্টি সবার হাইকমান্ডে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:২৭:০৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন কড়া নাড়ছে দুয়ারে। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তোড়জোড় নজর কাড়ার মতো। কে পেতে যাচ্ছেন নৌকার মনোনয়ন? এমন আলোচনা এখন সর্বত্র। অন্যদিকে, বিএনপির মাঝে কোন তোড়জোড় তো নেই-ই। বরং এ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে তাদের কোন ভাবনাই নেই বলে জানিয়েছেন নেতারা। তবে প্রার্থীদের মতো সবার দৃষ্টি দলগুলোর হাইকমান্ডের দিকে।
নৌকা পেতে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের হাইকমান্ডে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সরব প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন ঘিরে কয়েক মাস ধরে নগরজুড়ে নানা কৌশলে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ৯ সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী।
এদের মাঝে একজন বলছেন, তিনি গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে মাঠে আছেন। অন্যদিকে বাকীরা বলছেন, দল কাউকেই গ্রিন সিগন্যাল দেয়নি। এসব ভূয়া তথ্য।
আওয়ামীলীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৮ এপ্রিল ঘোষণা হতে পারে কে হচ্ছেন সিলেট সিটির আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ ঘোষণা দিতে পারেন।
আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য ৯ প্রাথীর মাঝে ৮ জনেরই সিলেট নগরে বসবাস। দলীয় কর্মকান্ডের পাশপাশি সাম্প্রতিক সময়ে মনোনয়ন পেতে বেশ তৎপর তারা। তারা হলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এ টি এম এ হাসান জেবুল, আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপলু ও সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী।
কিন্তু গত জানুয়ারী মাসে হঠাৎ লন্ডন থেকে সিলেট এসে মাঠ মাতাচ্ছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। তার আসার পর অনেকটা চুপসে গেছেন যেন বাকীরা।
গত ২২ জানুয়ারি দেশে ফেরেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ওই দিন হাজারো কর্মী-সমর্থক নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে শহরে আসেন তিনি। এ সময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিও সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এরপর আনোয়ারুজ্জামান দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের সঙ্গে দেখা করার পর আরও জোরালো হয় প্রার্থিতার বিষয়টি।
যুক্তরাজ্য থেকে এসে আনোয়ারুজ্জামান প্রচারণা চালাচ্ছেন সিলেটে। অন্যদিকে, বাকী ৮ মনোনয়ন প্রত্যাশীর একজন নগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন অবস্থান করছেন লন্ডনে। এটাও কোন কিছুর ইংগিত বহন করে বলে মনে করেন কেউ কেউ। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি কেন লন্ডনে এমন কথাবার্তাও চলছে দলে। যদিও তার অনুসারীরা বলছেন, নিতান্তই পারিবারিক সফরে তিনি লন্ডনে গেছেন। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, লন্ডনে সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী নেতার আলোচনা হয়েছে। লন্ডন থেকে ফেরার পর জাকির হোসেনের নির্বাচনের বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
এ ব্যাপারে নগর আওয়ামীলীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ গণমাধ্যমে বলেন, সিটি নির্বাচনে এখনও দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই তারা থাকবেন।
অন্যদিকে, বিএনপির কোন নড়াচড়া নেই। সম্ভাব্য কোন প্রার্থীও দেখা যাচ্ছেনা মাঠে। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই ব্যক্তিগত সফরে লন্ডন গেলেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। লন্ডন কানেকশন পাকাপোক্ত হলে তিনি হতে পারেন মেয়র প্রার্থী এমনটা মনে করছেন তার অনুসারীরা।
অনেকে বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে গেলে মেয়র আরিফুল হকই হবেন প্রার্থী। বিএনপি নির্বাচনে না গেলে নাগরিক সমাজের প্রার্থী করা হতে পারে তাঁকে। দলীয় নেতাকর্মীকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন তিনি। এছাড়া প্রতিটি বড় সমাবেশ সফল করায় তার অবদান আছে।
এ ব্যাপারে নগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, এখন পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সঠিক হবে না ; তাই তারা কোনো নির্বাচনেই অংশ নিতে চান না।