ঢাকায় ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ মে ২০২৩, ৮:২৩:২৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট: রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় শুক্রবার সকালে ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার সিটি সেন্টার থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দোহারে। ঢাকার এত কাছে ভূমিকম্প উৎপত্তির নজির সাম্প্রতিক সময়ে নেই।
শুক্রবার (৫ মে) ৫টা ৫৭ মিনিট ৮ সেকেন্ডে ভূমিকম্প অনুভূত হয় বলে জানান বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। উৎপত্তিস্থল দোহার থেকে ১৪ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্বে। যার গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।
এদিকে ঢাকার এত কাছে এ মাত্রার ভূমিকম্প উৎপত্তির ইতিহাস খুবই কম। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভূমিকম্পের জন্য দায়ী বেশ কয়েকটি প্লেট ও সাব-প্লেটের ওপর বাংলাদেশের অবস্থান হওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে দেশে বড় ভূমিকম্প হতে পারে। ভূতত্ত্ববিদরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এসব ভূমিকম্প সাত বা আট মাত্রা বা তারও বেশি হবে।
অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার এত কাছে ভূমিকম্প হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ফারজানা সুলতানা বলেন, এ ধরনের ছোট ছোট ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সাধারণত কাছাকাছি জায়গায় হয়ে থাকে। তবে ৩০ কিলোমিটারের এত কাছাকাছি উৎপত্তিস্থল এর আগে কখন হয়েছিল তার রেকর্ড দেখে বলতে হবে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এর আগে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলায় ৩ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। এ ধরনের ছোট ছোট ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে চট্টগ্রামে ৪.৬ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল পূর্ব মিয়ানমারের মাউলাইকে।
বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় ১৫৪৮, ১৬৪২, ১৬৬৩, ১৭৬২, ১৭৬৫, ১৮১২, ১৮৬৫, ১৮৬৯ সালে বড় ভূমিকম্প হওয়ার ঐতিহাসিক উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসবের মাত্রা কত ছিল তা জানা যায় না।
এছাড়া ১৮২২ এবং ১৮১৮ সালে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলে ৭.৫ ও ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে সেসব ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির তেমন বর্ণনা পাওয়া যায় না।
বছরের শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বাংলাদেশে গত ১২০-২৫ বছরে মাঝারি ও বড় মাত্রার প্রায় শতাধিক ভূকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এসবের মধ্যে ৭ বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্পের সংখ্যা খুব বেশি নয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর নিচে যে পরিমাণ শক্তি জমা হয়ে আছে তা বের হলে বাংলাদেশে বেশ বড় ধরণের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।