গরমে প্রাণহীন প্রকৃতি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ মে ২০২৩, ৯:১১:১৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে তীব্র দাবদাহ। এপ্রিল মাসের শেষ দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও মে মাসের শুরু থেকে তাপপ্রবাহে অস্থির সময় পার করছেন মানুষ। প্রচন্ড গরমে শুধু জনজীবনই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েনি, প্রকৃতিও অনেকটাই প্রাণহীন হয়ে পড়েছে।
রোদের উত্তাপে বাইরে বের হলেই যেন চোখ যেন পুড়ে যাচ্ছে। ছুটে চলা কর্মব্যস্ত নগরবাসী, পথচারী, বিভিন্ন গাড়ীর চালকেরা, পেশাজীবি-দিনমজুর, নিম্নআয়ের, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অনেক পোষ্য প্রাণী গরম সইতে না পেরে আশপাশের ড্রেন বা জলাশয়ে নেমে পড়েছে। তীব্র গরমের কারণে নগরীর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ, বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিগত বাসা-বাড়ীতে বিরতিহীনভাবে চলছে এসি, এয়ারকুলার, ফ্যান।
সিলেটে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। আগের দিন সোমবারও সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী রেকর্ড করেছিলো একু ওয়েদার। তবে সেদিন একু ওয়েদারের চেয়ে ১ দশমিক ৮ ডিগ্রী তাপমাত্রা কম দেখিয়েছিলো আবহাওয়া অফিস।
আজ বুধবার সিলেটে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী ছুঁতে পারে বলে আভাস দিয়েছে একু ওয়েদার। আর তাপমাত্রা অনুভূত হতে পারে ৪৫ ডিগ্রী। মঙ্গলবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ আছে। এটি ঘনীভূত হলে ১৩ থেকে ১৪ মে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি হতে পারে। ১৫ মে ঘূর্ণিঝড়েরও পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে, টানা দাবদাহ, খরা আর অনাবৃষ্টিতে আম ও লিচুর ফলনে বিপর্যয়ের পাশাপাশি আউশ ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।
অনেকে জানিয়েছেন, খরার কারণে অনেক আম ও লিচু অকালে ঝরে যাচ্ছে। গাছে থাকা আম-লিচু ফেটেও যাচ্ছে। এতে আশানুরূপ ফলন হবে না। এছাড়া অনাবৃষ্টিতে বেশির ভাগ জমিতে আউশের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়নি। মূলত কৃষকেরা বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন। বৃষ্টি হলেই তারা আউশের বীজতলা তৈরি করবেন। সিলেটে আউশের সেচ সুবিধা কম থাকায় ফলন হোঁচট খেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
একদিকে তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ, অন্য দিকে দিকে সাগরে লঘুচাপ। আর এমন অস্বস্তিকর আবহাওয়ার মধ্যেই আগামী কয়েক দিনের মধ্য ধাপে ধাপে সৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। এরপর তা বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ভারতে কন্ট্রোল রুম খোলাসহ নানা প্রস্তুতি নেওয়া হলেও বাংলাদেশে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।