শাল্লায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ মে ২০২৩, ৬:০৬:৩৮ অপরাহ্ন
শাল্লা সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের শাল্লায় টিউবওয়েলে নেই পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। গত ১৫ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে উপজেলাজুড়ে চলছে নিরব হাহাকার। তীব্র তাপদাহ, অনাবৃষ্টি ও নদী-নালা, খাল-বিল ভরাটের কারণে পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় এমন সংকট তৈরী হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার ৪ ইউনিয়নে সরকারি-বেসরকারি হিসেবে মোট ৬ হাজার টিউবওয়েল রয়েছে। এই ৬ হাজার টিউবওয়েল থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ যাবতীয় কাজ করে থাকে লক্ষাধিক মানুষ।
জনস্বাস্থ্য অফিস সুত্রে জানা যায়, ৫ থেকে ১০ শতাংশ টিউবওয়েল বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এদিকে, পানির স্তর নীচে চলে যাওয়ায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। যার ফলে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদী-নালা, খালা-বিল, পুকুর-ডোবা ভরাট হওয়ার কারণে ও অনাবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন টিউবওয়েল থেকে পানি উঠছে না। যে সকল টিউবওয়েলে পানি উঠছে সেখান থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছে গ্রামবাসী। দৈনন্দিন কাজের জন্য নদী-নালা ও পুকুর ডোবার পানি ব্যবহার করছে। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির উৎসগুলোর পানি নষ্ট হওয়ার পর্যায়ে। তাই শিশু কিশোরসহ অনেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
৪নং শাল্লা ইউনিয়নের মনুয়া গ্রামের মমিনুল হক বলেন, ‘আমার বাড়ির টিউবওয়েল পানি খুব কম দেয়। হেমন্তের শুরু থেকেই এই সমস্যা, তবে বর্ষায় একটু পানি পাওয়া যায়। গ্রামের সব টিউবওয়েলের একই অবস্থা।
এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও শাল্লা উপজেলার সামাজিক সংগঠক তালহা অলি জানান, বিভিন্ন টিউবওয়েলে পানি নেই, পানি দিয়ে চাপাচাপি করলেও পানি উঠছে না। পানির উৎসগুলো ভরাট হওয়ায় এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি এ বছর অনাবৃষ্টি ও জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। যদি আরো কিছু দিন বৃষ্টি না হয় তাহলে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে।
উজানগাঁও ফকির আহমদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের স্কুলের টিউবওয়েলে দীর্ঘদিন যাবত পানি উঠে না। মোটরের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের পানি চাহিদা পূরণ করতে হচ্ছে। শুনেছি এলাকার অনেকের টিউবওয়েলে সমস্যা দেখা দিছে।
শাল্লা উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, জলবায়ূর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে শুষ্ক মৌসুমে দিন দিন এই সমস্যা বাড়ছে। এবছর অনাবৃষ্টির কারণে সমস্যা প্রকট হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে মোটরসহ সাবমার্সেবল পাম্পের বিকল্প নেই। তবুও যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেখানে আমাদের লোক সার্বক্ষণিক তদারকিতে আছে। যার যে সমস্যা হচ্ছে সেটা সমাধানের চেষ্টা করছে।