মূখ্য ভূমিকায় পাক সুপ্রিম কোর্ট : ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ মে ২০২৩, ৮:০২:৫৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : এক ঘণ্টার মধ্যে নাটকীয় মোড় নিলো পাকিস্তানের রাজনীতি। মূখ্য ভূমিকা নিলো সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট। যুগান্তকারী এক আদেশে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে ‘বেআইনি’ অভিহিত করে ‘অবিলম্বে মুক্তি’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আল কাদির ট্রাস্টের জমি সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতারির পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ইমরান খান। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বৈধতা নিয়ে আবেদনের শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি নেন। শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালত আজ একটি সুনির্দিষ্ট আদেশ দেবে, আদালত বিষয়টি ‘খুব গুরুত্ব’ দিচ্ছে। এই মামলায় ‘উপযুক্ত’ রায় দেওয়া হবে। শুনানির এক পর্যায়ে এক ঘণ্টার মধ্যে ইমরান খানকে হাজির করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। এরপর বিকেল পৌনে ৫টার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইমরানকে আদালতে হাজির করা হয়।
পরে শুনানি নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের গ্রেপ্তারকে বেআইনি ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন। একাইসাথে ইমরানকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশও দেন সুপ্রিম কোর্ট।
ইমারন খানকে নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতি এখন উত্তাল। শাহবাজ শরিফ অনেকটা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ইমরান খানকে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে বিদায় করতে চেয়েছিলেন। পাকিস্তানের জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে। দখলে নিয়েছে রাজপথ। আক্রমণের শিকার হয়েছে সামরিক স্থাপনা। যেটা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। আদালতের এই ঐতিহাসিক রায় নিয়ে চলছে এখন নানা পর্যালোচনা। শাহবাজ শরিফের সরকার এখন কী করবে? সেনাবাহিনীর ভূমিকাই বা কী হবে? সুপ্রিম কোর্ট চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। আইনের শাসনের প্রতি আদালতের অবিচল আস্থা আবারো প্রমাণিত হলো। এসব ঘটনা যখন ঘটছে তখন পাকিস্তানের জনগণ ফের রাস্তায় উল্লাস করছে।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদের হাইকোর্ট থেকে গ্রেফতার করা হয় ইমরানকে। বুধবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন বিভাগ বা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব) ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিল ইমরানের। আদালত ৮ দিনের রিমান্ড দিয়েছিলেন। বুধবার আদালতে শুনানির সময় ইমরান বিচারককে জানিয়েছিলেন, হেফাজতে থাকাকালীন গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁর উপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে। এমনকি শৌচাগারেও যেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে।
এদিকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৮ জন নিহত এবং ২৯০ জন আহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন ১ হাজার ৯০০ বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি সামাল দিতে পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখাওয়া ও ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলা এবং রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদর দপ্তরের ফটক ভাঙচুর করার পর সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইমরান খানের সমর্থকদের ‘রাষ্ট্রীয় শত্রু’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।