ধেয়ে আসছে মোখা, ভূমিধস-জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ মে ২০২৩, ৯:০০:৪৬ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: আশঙ্কা বাড়িয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিয়েছে মোখা। আবহাওয়াবিদদের ভাষায়, যা ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ নামে পরিচিত। আজ শনিবার সমুদ্রের উপরেই থাকবে ঘূর্ণিঝড়। এ সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ২১০ কিমি। কাল রোববার দুপুরে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়ানমারের কায়াকপুরের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এই পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্কে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যেই ঝড় মোকাবিলায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
মোখার প্রভাবে মোখার প্রভাবে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বাতাসের তীব্রতা বাড়বে। শুক্রবার থেকে কক্সবাজার উপকূলে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে সিলেটে বৃষ্টি বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টিতে সিলেটে যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা প্রশমিত হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
বাংলাদেশে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই পর্যটকদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমশ কমেছে কক্সবাজার এলাকায়। আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের ১১ হাজার মানুষ চরম আতঙ্কে আছেন। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য কাঠের ট্রলার ও দ্রুতগতির স্পিডবোটে চড়ে ৩৪ কিলোমিটার দূরে টেকনাফ সদরে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত বছরে অক্টোবরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জলোচ্ছ্বাসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ তলিয়ে গিয়েছিল। এ সময় শতাধিক ঘরবাড়ি ও বিপুল নারকেলগাছ উপড়ে পড়েছিল। ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাতের সময়কালে সাগরে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার জোয়ারের প্রভাব থাকতে পারে। এ সময় জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বোচ্চ ২০-২৫ ফুট বেশি হতে পারে। তখন ক্ষয়ক্ষতিও বাড়তে পারে। জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর মতো টেকসই বেড়িবাঁধ সেন্ট মার্টিনে নেই।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের অসংখ্য বাড়ি, গাছ তলিয়ে যেতে পারে। দ্বীপের অন্তত ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানোর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা এখন বাংলাদেশের দিকে আসছে। তাই সংকেত পাল্টানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ শামিম হাসান ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে কক্সবাজার উপকূল এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। কক্সবাজার এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে টেকনাফে ৫ থেকে ৭ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসেরও আশঙ্কা রয়েছে
সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে সেটি হয় সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়। বাতাসের গতিবেগ ৮৮ থেকে ১১৭ হলে তাকে বলা হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর বাতাস যদি ১১৭ থেকে ২২০ কিলোমিটার বেগে বয়, তবে তা হয় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর ২২০ কিলোমিটারের ওপরে বাতাসের গতিবেগ উঠলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়।