ব্যবসায়ীদের কূটকৌশল বটে!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ মে ২০২৩, ১২:০৩:৫৬ অপরাহ্ন
মিডিয়া সূত্রে প্রকাশ, মাংসের অত্যাবশ্যকীয় গরম মশলা দারুচিনি, লবঙ্গ, জিরা, আদা, ধনিয়া ইত্যাদি পণ্যের দাম ইতোমধ্যে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতিবেশী ভারত এসব পণ্যের রফতানী বন্ধ করে দেওয়ার ফলে এবং সরবরাহ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপরদিকে, সচেতন মহল ও বাজার বিশ্লেষকদের অভিমত, এবার মশলাপাতির ব্যবসায়ীরা মুনাফাখোরীর ক্ষেত্রে একটি নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। দেখা গেছে, খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম যখন প্রতিনিয়ত বাড়ছে, বাড়ছে মূল্যস্ফীতি, তখন কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে এখন থেকেই নিত্যপণ্যের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ঢাকাস্থ নিত্যপণ্যের বড় বড় বাজার ঘুরে এসে মিডিয়ার সাংবাদিকরা মশলাপাতির মূল্যের এক অভাবনীয় ও অসহনীয় সংবাদ প্রদান করেছেন। কুরবানীর ঈদ আসতে এখনো বেশ বাকী। কিন্তু এরই মধ্যে বিভিন্ন গরম মশলার দামে মারাত্মক উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সরকারী ক্ষেত্রে চাপ ও অভিযানের ফলে ঈদের আগে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা কমাতে বাধ্য হয়। তাই এবার আগে ভাগেই তারা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পরে সরকারী নির্দেশনা জারি হলে কিংবা অভিযান শুরু হলে ঈদের ঠিক আগে আরেক দফা বর্ধিত দাম কিছুটা কমিয়ে দেবে। ফলে তাদের মোটা অংকের লাভ অর্থাৎ মুনাফাখোরীতে কোন সমস্যা হবে না। কাংখিত তারা উচ্চ মূল্যেই এসব পণ্য বিক্রিতে সক্ষম হবে।
মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২ মাস আগে যে গরম মশলা জিরা প্রতি কেজি ৩২৪ টাকা ছিলো, তা এখন ৭০০ টাকা ও ধনিয়া প্রতি কেজিতে ৭০ টাকারও বেশী বেড়ে এখন ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গোলমরিচের দাম এখন ১০০০ টাকা, আগে ছিলো ৯০০ টাকার কিছু কম। দারুচিনি এখন ৫৪৫ টাকা, আগে ছিল ৩০ টাকা কম। এছাড়া কিসমিস ৪৪২ টাকা থেকে বেড়ে ৪৭০ টাকা হয়েছে। সবচেয়ে বেশী বেড়েছে এলাচ ও লবঙ্গের দাম। গত ২ সপ্তাহে এলাচের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৪০০ টাকা। আর লবঙ্গের দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা। এভাবে প্রতিটি গরম মশলার দাম গত ২/১ মাসের ব্যবধানে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
দেখা যাচ্ছে, কুরবানীর ঈদে মাংস রান্নায় যেসব গরম মশলা বেশী ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর দামই সবচেয়ে বেশী বেড়েছে। যেমন এলাচ। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সাধারণতঃ সেই সব পণ্যকে তাদের কারসাজির ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, যে সময় সেগুলোর চাহিদা সবচেয়ে বেশী, সবচেয়ে বেশী বৃদ্ধি পায়। ভিন্ন পন্থায় কোন পণ্যের সরবরাহ বেড়ে গেলে তারা সেই পণ্যকে আর অসৎ ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না।
কয়েক মাস আগে হঠাৎ পেঁয়াজের আমদানি বা সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী হতাশ হয়ে পড়ে। বহু পেঁয়াজ পঁচে যায়। তাই বাজারে পেঁয়াজের দামও হ্রাস পায়। এখন আবার আমদানী কম হওয়ায় পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজিতে নেমেছে অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।
সচেতন মহল বিশেষভাবে ভোক্তা অধিদপপ্তরের কর্মকর্তা ও অন্যান্য ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে কর্মরত সংস্থাগুলো মনে করেন, ঈদের আগে যেভাবে অভিযান পরিচালনা হয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে, একইভাবে এখনই এ ধরনের অভিযান শুরু করা দরকার। কারণ অসৎ ব্যবসায়ী কূটকৌশল অবলম্বন করে ঈদের অনেক আগেই বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মাংসের গরম মশলায় বর্তমান মূল্যে এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। আমরা এদিকে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।