উত্তাপ ছড়াচ্ছে আদা-পেঁয়াজ-চিনি
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০২৩, ৯:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নিত্যপণ্যের বাজারে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এখন উত্তাপ ছড়াচ্ছে আদা ও পেঁয়াজের দাম। আদার দাম ৩শ টাকা ছুঁই ছুঁই। আর পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরীর পথে।
গতকাল সিলেটের খুচরা বাজারে আদা প্রতি কেজি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা পর্যন্ত। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা পর্যন্ত।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কেজি দরে তারা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। আর আদা ২৬০-২৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে মানভেদে।
অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ আমদানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা কমবে। হিলি, সোনামসজিদ, বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনেকে ঋণপত্র খুলেছেন, আবার অনেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশের বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে পারবেন। তখন পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, আমদানি পেঁয়াজের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। যদিও বাজারে আমদানি পেঁয়াজ নেই বলে জানিয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
এদিকে পেঁয়াজের দামের বিষয়কে ভোক্তারা অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক মনে করছেন। মুন্না নামে এক ক্রেতা বলেন, সরকার বলছে দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাহলে তো দাম কমার কথা, কিন্তু গত এক মাসে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে।
সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দাম এখন যেভাবে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ বাড়ানো হবে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের বাজারে ব্যবসায়ীদের কারসাজি সব সময় থাকে। এখন দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হলেও তারা সংকট দেখাচ্ছে। আবার সংরক্ষণের অভাবে ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ঘাটতি দেখা দেয়। সে অজুহাতে বাজারে অযৌক্তিক পর্যায়ে দাম চলে যাচ্ছে। সেজন্য এখন আমদানি করা যেতে পারে।
এদিকে, সামনে কোরবানির ঈদ। ওই সময় আদার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফলে হঠাৎ করেই আদার দাম ১৮০ টাকা বেড়েছে। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি।
বন্দরবাজারের এক খুচরা ব্যবসায়ী বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ঈদ আসতে এখনো অনেক দেরি। অথচ এখন থেকেই আদার দাম যেভাবে বাড়ছে তা সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। দাম বাড়ার একটা সীমা আছে!
এদিকে, প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। টিসিবি‘র হিসাবে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা। অথচ বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি চিনি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত মাসে সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৪ টাকা বেঁধে দিয়েছিল।
চিনির পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল ফটকে দিনের পর দিন ট্রাক বসিয়ে রেখেও চাহিদা অনুযায়ী চিনি পাচ্ছেন না তারা। এর ফলে বাজারে চিনির ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, দামও বাড়ছে।