বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণে শুল্কহার বাড়ছে শতভাগ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ মে ২০২৩, ৮:০৬:৫৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক: দশ বছর ধরে চলে আসা বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণে দেওয়া শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহার হচ্ছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতের ১০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা তুলে দিয়ে আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর ফলে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন উপকরণ আমদানির ওপর আগের মতো মোট ১১০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত বিলাসবহুল ও মানসম্পন্ন আবাসিক হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানির ওপর ১১০ শতাংশ শুল্কহার ধার্য ছিল। তবে ২০১৪ সালে এনবিআরের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের (এসআরও) মাধ্যমে সেই শুল্কহার ১০০ শতাংশ কমিয়ে মাত্র ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। সেই থেকে প্রায় দশ বছর এ খাতের উদ্যোক্তারা ন্যূনতম শুল্কহারের এই সুবিধা পেয়ে আসছেন। তবে বর্তমানে এ খাতে আর ছাড় দিতে রাজি নয় এনবিআর। এবার কর ছাড়ের সংস্কৃতির উদ্যোগের বছরে বিভিন্ন এইচএস কোডের অধীনে এ খাতের বিভিন্ন আমদানি উপকরণের ওপর আগের মতো সেই ১১০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে এনবিআর।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন হোটেল নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ আমদানিতে ছাড় ছিল। বর্তমানে সরকার মনে করে, এ খাত যথেষ্ট বিকশিত হয়েছে। সরকারি নীতিসহায়তা ছাড়াই তারা এগিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে গেছে। দীর্ঘমেয়াদে কোনো খাতে ছাড় অব্যাহত রাখলে তারা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পরিবর্তে মুখাপেক্ষী হয়ে যায়। তখন তারা প্রতিনিয়ত আরও সুবিধা পেতে চায়। এ ছাড়া আগামী বাজেটে অব্যাহতি কমানোর জন্য আইএমএফের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী বাজেটে শুল্ক সুবিধা প্রত্যাহারের ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, এনবিআরের এক আদেশে আবাসিক হোটেল নির্মাণে ব্যবহৃত আমদানি করা সুনির্দিষ্ট পণ্যে শুল্ক রেয়াতি সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। হোটেলের ভেতরে সাজসজ্জা বা ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন থেকে শুরু করে রান্নাবান্না, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, লাইটিং, ইলেকট্রনিকসসহ অন্তত ৪০টি উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অনেক খাতেই কর সুবিধা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। মানসম্মত হোটেল বিলাসিতার মধ্যেই পড়ে। তবে এতে খুব বেশি রাজস্ব আদায় হবে বলে মনে হয় না। আর এজন্যই হয়তো এনবিআর এই সুবিধা বন্ধ করে দিচ্ছে আগামী বাজেটে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ঠিক কত রাজস্ব আদায় হবে, তা আমরা জানি না, তবে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক বলা যায় বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।