আস্থা ফেরানোর চ্যালেঞ্জে ইসি
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মে ২০২৩, ১২:১০:৪৯ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : আসন্ন সিটি নির্বাচন নিয়ে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মূখে নির্বাচন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের ৫ সিটির ভোটকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য এসিড টেস্ট হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এসব সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হলে ইসির ওপর রাজনৈতিক দলের আস্থা কিছুটা হলেও বাড়তে পারে। তবে এ ভোটে ব্যাপক অনিয়ম-কারচুপি হলে রাজনৈতিক দলসহ দেশ-বিদেশে আস্থা হারাবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গাজীপুর, বরিশাল, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে দেখছে খোদ ইসিও। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে চায় ইসি।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলের দাবি মেনে ব্যালটে ভোট করছে ইসি। তফসিলের পর ইসির হাতে ক্ষমতা থাকবে। ভোট সুষ্ঠু করতে যা করার, ইসি তা করতে সক্ষম। সুষ্ঠুভাবে ৫ সিটির নির্বাচনের মাধ্যমে এ বার্তা দিয়ে ভোটের প্রতি গণমানুষের আস্থা ফেরাতে চায় ইসি।
অবশ্য, শনিবার গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এমন কথাই জানিয়েছেন ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ট্রায়াল হিসেবে নিয়েছে কমিশন।
ইসি সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা গেলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশবাসী, রাজনৈতিক দল এবং সারা বিশ্ববাসীর মধ্যে অন্য ধরনের একটি অনুভূতি কাজ করবে।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এসব (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে এর প্রভাব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর মারাত্মকভাবে পড়বে। সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে গিয়ে ইসিকে আরও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হবে। তবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা ইসির জন্য সহজ হবে। এসব বিবেচনায় ওই নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইসির জন্য একটি পরীক্ষা। এ কারণে নির্বাচন কমিশনকে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
অন্যদিকে ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৫ সিটির ভোটে প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসিকে ইতোমধ্যেই আশ্বস্ত করেছে, তারা ভোট সুষ্ঠু করতে ইসির নির্দেশনা মেনে চলবে। এসব সিটির নির্বাচন কেমন হয় সে অভিজ্ঞতা নিয়ে ইসি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঢেলে সাজাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা পরবর্তী বছরের শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি রয়েছে ইসির। নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে অংশগ্রহণ করাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে ইসি। ৫ সিটির ভোট সুষ্ঠু করে দেশ-বিদেশে এবং রাজনৈতিক দলের আস্থা আর্জন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। ইসির প্রতি আস্থা ফেরাতে সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ৫ সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীসহ সব প্রার্থী এবং তাদের লোকজনকে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য একাধিক বার নোটিশ করেছে ইসি এবং প্রার্থীদের জবাবদিহিতায় এনেছে।
ইসি সূত্র জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হবে আগামী ২৫ মে, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে হবে ১২ জুন এবং রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট ২১ জুন। সব সিটির ভোটই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে হবে। ভোটগ্রহণ চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
এদিকে রোববার পর্যন্ত সিসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে মেয়র পদে ১১ জন ও কাউন্সিলার পদে ৪৪৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও নগরে এখনো নির্বাচনী আমেজ তৈরী হয়নি। শুধু সরকারী দলের মেয়র প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীগণের তেমন তৎপরতা এখনো চোখে পড়েনি। ফলে আসন্ন সিলেট সিটি নির্বাচন কেমন হবে এনিয়ে উদ্দিগ্ন নগরীর অধিকাংশ মানুষ।