শঙ্কা বাড়াচ্ছে ডেঙ্গু
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ মে ২০২৩, ৮:১৪:০৮ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্টার: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এডিস মশার প্রজননের মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু রোগীর আশঙ্কাজনক বৃদ্ধিতে শঙ্কা বাড়ছে।
এ বছরের প্রথম ৫ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের প্রথম ‘৫ মাসের’ তুলনায় প্রায় ছয় গুণ। গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গুতে মৃত্যু শূন্য থাকলেও এবার তা ১৩ জন।
সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গুর মৌসুম। কারণ এই সময়ে বর্ষাকাল শুরু। তখন বৃষ্টির পানি বিভিন্ন স্থানে জমে থাকে। আর এই প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই এই সময়টাকে ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশার প্রজননকাল ধরে নেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক কোনো রোগ নয়। সারা দেশেই মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬২ জনে। তবে এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
প্রজননের মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, এখন এমন অনেক জায়গায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে বৃষ্টির পানির সম্পর্ক নেই। এর মধ্যে বহুতল ভবনের পার্কিংয়ের জায়গা, নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্ট, ওয়াসার মিটার বাক্স এবং বাসাবাড়িতে জমিয়ে রাখা পানি রয়েছে। রাস্তা উঁচু করার ফলে নিচু হয়ে যাওয়া বাসাবাড়ির জমা পানিতেও এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে। নানান কারণে সারা বছরই এখন পানি জমে থাকছে। মে মাসে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এডিসের আরও বেশি প্রজননক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২১ মের মধ্যে আক্রান্ত (হাসপাতালে ভর্তি হওয়া) ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১০০ জন। এই সময়ের মধ্যে কোনো মৃত্যু ছিল না। পরের বছর ২০২২ সালেও এই সময়ের মধ্যে কোনো ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ২৪৩ জন। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে ২১ মে পর্যন্ত আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগী ১ হাজার ৪৪৭ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৯৬ গুণ বেশি। আর ২০২১ সালের তুলনায়, প্রায় সাড়ে ১৪ গুণ। এ বছর এ পর্যন্ত ১৩ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে দেশে ১৪৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২৬ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, লক্ষ্মীপুরে ২ জন করে এবং কিশোরগঞ্জ, খাগড়াছড়ি ও সাতক্ষীরায় ১ জন করে ভর্তি আছেন। এই ২০ রোগীর বাইরে বাকি ৬ রোগীর মধ্যে ৪ জন ভর্তি রয়েছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ২ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।