অনাথ-অসহায় বলে বাড়িতে আশ্রয় : গৃহকর্তার শিশু সন্তানকে অপহরণের পর ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ মে ২০২৩, ৯:১৮:৪৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : তিন সপ্তাহ আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা মো. ফয়জুদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় চান জাফর মিয়া (২৪) নামের এক যুবক। এ সময় তিনি নিজেকে অনাথ ও অসহায় বলে জানান। এসব কথা শুনে গৃহকর্তা জাফরকে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০ দিনের মাথায় ঘটে বিপত্তি। গৃহকর্তার এক বছর বয়সী শিশু সন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যায় জাফর। পরে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সে ওই শিশুকে বিক্রি করে দেয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। তবে অপহরণকারী ওই যুবককে আটক করতে পারেনি।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস বিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শেখ মো. সেলিম।
শেখ মো. সেলিম বলেন, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের উপরগ্রামের মো. ফয়জুদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন জাফর মিয়া। সে সময় তার পুরো নাম-ঠিকানা কিছুই জানায়নি জাফর। শুধু বলেছিলেন, তার বাড়ি মৌলভীবাজারে। কিছুদিন বাড়িতে থাকার ফলে গৃহকর্তা ফয়জুদ্দিনের শিশু সন্তানের সঙ্গেও জাফরের ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়। গত ২৭ মে ওই শিশুকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে যায় জাফর। পরে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সর্দারপুর গ্রামের মমতা বেগম (৪৫) নামের এক নারীর কাছে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করে দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম বলেন, শিশু নিখোঁজের পর তার বাবা ফয়জুদ্দিন গোয়াইনঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। শিশুটিকে অপহরণের সময় গৃহকর্তা ফয়জুদ্দিনের একটি মুঠোফোনও নিয়ে যায় জাফর। একপর্যায়ে সেটি বন্ধ করে দেয়। তবে এর আগে ওই মুঠোফোন দিয়ে একাধিকবার মমতা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করে জাফর। সে সূত্র ধরে সোমবার রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার সর্দারপুর গ্রামের অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মমতা বেগমকে আটক করলেও জাফরকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তাকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
প্রেস বিফিংয়ে জানানো হয়, মমতা বেগম ও জাফর পূর্বপরিচিত। মমতা বেগমের তিন মেয়ে। পরিচয়ের সূত্র ধরে মমতা জাফরকে বলেছিলেন, একটি ছেলে সন্তান এনে দিতে পারলে তাকে ১৫ হাজার টাকা দিবে। সেই টাকার জন্যই জাফর শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি হয়েছে।