গোলাপগঞ্জে আগুনে দোকান ভষ্মীভূত, ক্ষতি ২ কোটি টাকা, ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০২৩, ১০:৫১:১০ অপরাহ্ন
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি : গোলাপগঞ্জে ছাত্রলীগের দেয়া আগুনে পুড়ে গেছে ‘মেসার্স মঈন এন্ড সন্স’ নামক দোকান। গত ২৬ মে দিবাগত গভীর রাতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার ৪ দিন পর দোকানের স্বত্তাধিকারী গোলাপগঞ্জের ঘাগুয়া গ্রামের মোঃ মঈন উদ্দিন বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা সবাই সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তারা হলেন- আমুড়া গ্রামের রুস্তুম আলীর পুত্র রাসেল, একই গ্রামের আকমল আলীর পুত্র রাহাত চৌধুরী, শিবপুর গ্রামের মনোহর আলীর পুত্র জাবের আহমদ, শিলঘাট গ্রামের আবুল লেইছের পুত্র ইমন আহমদ ও আমনী গ্রামের রেজাউল আলমের পুত্র সৈয়দ জাকির।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আসামীগণ স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এলাকায় তাদের বেশ প্রভাব রয়েছে। মামলার বাদী মোঃ মঈন উদ্দিনের পুত্র মোঃ সুলতান আহমদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। তাই রাজনৈতিক বিরোধিতার জের ধরে আসামীগণ বেশ কয়েকদিন আগে বাদীর পুত্রকে মারধর করে আহত করে। এ বিষয়ে বাদির পিতা থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণ করেনি। উল্টো ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়। ছেলের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাদী তার পুত্রকে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। পরে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা বাদীর দোকানে এসে ৫ লক্ষ চাঁদা দাবী করে। বাদী তা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে হত্যা, গুম ও মামলা মোকদ্দমার হুমকি ধামকিসহ সুযোগমতো উচিৎ শিক্ষা দিবে বলিয়া সন্ত্রাসীরা চলে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬/০৫/২০২৩ ইং তারিখ দিবাগত রাত অনুমানিক ১টার দিকে সন্ত্রাসীরা বাদীর দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় বাজারে দোকানের এক কর্মচারী ও নৈশপ্রহরী ঘটনাটি দেখতে পেয়ে মোঃ মঈন উদ্দিনকে খবর দিলে তিনি ঘটনাস্থলে এসে দেখতে পান সারা দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তার মালিকানাধীন দোকান ‘মেসার্স মঈন এন্ড সন্স’ দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সহিত রড, সিমেন্ট, ঢেউটিন ও লোহার ব্যবসা করে আসছে। বাদী তাৎক্ষণিক বিষয়টি বাজার কমিটিকে অবগত করে লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে থানা কর্র্তৃপক্ষ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। আসামীগণ সরকারদলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় তাদের বেশ প্রভাব রয়েছে। তাই তিনি ঘটনার ৪ দিন পর গতকাল ৩০ মে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। গোলাপগঞ্জ সি.আর মামলা নাং- ৩৮২/২০২২ ইং। তারিখ: ৩০/০৫/২০২৩ ইং।
বাদী অভিযোগ করেন, অগ্নিকান্ডে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার ক্ষমতা তার নেই। তিনি ও তার পরিবার বড়ই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। তার ছেলে মোঃ সুলতান আহমদ দেশে ফিরে আসলে সন্ত্রাসীরা যে কোনো সময় তাকে প্রাণে হত্যা করবে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনসহ স্থানীয় লোকজন কোন ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ। তিনি বড়ই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, সুনির্দিষ্ট প্রমান ছাড়া কারো বিরুদ্ধে মামলা নেয়া সম্ভব নয়। তারা মোঃ মঈন উদ্দিনের দোকানঘর পরিদর্শন করেছেন। কে বা কারা এ আগুন দিয়েছে এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। এ বিষয়ে আদালত মামলা গ্রহণ করে নির্দেশ দিলে তা তদন্ত করে দেখা যাবে।